ট্রাকচাপায় বাচ্চা প্রসব, প্রসূতির প্রাণ গেলেও বেঁচে গেল নবজাতক
১৬ জুলাই ২০২২ ২০:৩৫
ময়মনসিংহ: ‘রাখে আল্লাহ, মারে কে’— বহুল প্রচলিত এই বাক্যটির প্রমাণ মিলল ময়মনসিংহের ত্রিশালের কোর্টবিল্ডিং এলাকায়। ত্রিশালের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় বাবা, বোন ও অন্তঃসত্ত্বা মা মারা গেলেও আঘাতে সদ্য প্রসব শিশুটি বেঁচে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (১৬ জুলাই) বেলা পৌনে ৩টার দিকে ত্রিশালের কোট বিল্ডিং এলাকায় মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন- জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২) এবং তাদের মেয়ে সানজিদা (৬)। তবে ট্রাকচাপায় অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম মারা গেলেও আঘাতে তার পেট থেকে প্রসব হওয়া নবজাতক বেঁচে যায়। পরে শিশুটিকে উদ্ধার করে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে শনিবার রাতে ময়মনসিংহ সদরে সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফ রব্বানী সারাবাংলাকে বলেন, ‘রত্না বেগম অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তার ডেলিভারির তারিখ দু’দিন পার হয়ে যাওয়ায় তিনি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি ও তার স্বামী-সন্তানের মৃত্যু হয়। তবে এ সময় আঘাত পেয়ে সন্তান প্রসব করে ফেলেন রত্না ‘
প্রতিবেশী মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘পেট থেকে বাচ্চা বের হওয়ার খবর পেয়ে আমি সেখানে ছুটে যাই। শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। পরে সদরের সিবিএমসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নবজাতকটিকে।’
সিবিএমসি হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আরিফ আল নূর বলেন, ‘আমরা বাচ্চাটির অবস্থা ভালো পেয়েছি। এক্সরে করার পর ডান হাতের দুটি অংশে ভাঙা দেখা গেছে। তবে বড়ধরনের কোনো আঘাত নেই বলে মনে হচ্ছে।’
ত্রিশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইন উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলে একই পরিবারের তিনজন নিহত হলেও অলৌকিকভাবে পেটের শিশুটি বেঁচে যান। নিহত রত্না বেগম আল্ট্রসনোগ্রাফি করাতে এসেছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে ট্রাক তাদের চাপা দেয়।’
ওসি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। যদিও ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম