‘স্বামীর অবহেলায়’ ক্ষুব্ধ স্ত্রী আগুন দিল শরীরে, পরে মৃত্যু
১৯ জুলাই ২০২২ ২০:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্বামীর অবহেলা সহ্য করতে না পেরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া এক গৃহবধূর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার দক্ষিণ ধুম গ্রামে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মৃত রুপনা দাশ (৩৩) তার স্বামী রুপম কুমার দে’র সঙ্গে মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট বাজারে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাদের দুই বছর বয়সী এক মেয়ে আছে।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নূর হোসেন মামুন সারাবাংলাকে জানান, সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ধুম গ্রামে স্বামীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সামনে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন রুপনা। পরে দগ্ধ অবস্থায় রাতে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে চমেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরিবারের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘রুপনা তিন বছর আগে প্রথম স্বামীকে তালাক দিয়ে রুপমকে বিয়ে করেছিলেন। রুপমের পরিবার এই বিয়ে মেনে না নেওয়ায় তারা ভাড়া বাসায় থাকতেন। কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলছিল। স্বামীর অবহেলা নিয়ে স্ত্রীর মধ্যে অভিমান ছিল। এর মধ্যে ঝগড়া করে কয়েকদিন আগে রুপম বাসা থেকে বেরিয়ে নিজের বাড়িতে চলে যায়। স্বামীকে ফিরিয়ে আনার বিভিন্ন চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত শনিবার তার বাড়িতে যান রুপনা। ওইদিন তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফিরে আসেন।’
ওসি জানান, এরপরও রুপম ফেরত না যাওয়ায় সোমবার সন্ধ্যায় রুপনা তার মেয়েকে নিয়ে আবারও স্বামীর বাড়িতে যায়। রুপমের উপস্থিতিতে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী রুপনাকে অপমান করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাৎক্ষণিকভাবে রুপনা ব্যাগ থেকে কোরোসিন তেল বের করে গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরিবারের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ ঘটনায় রুপনার বোন বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় রুপম, তার মা-বাবা ও ভাই-বৌদিসহ মোট পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম