মাঠ শুকিয়ে কাঠ, বিপাকে উত্তরের আমন চাষিরা
২০ জুলাই ২০২২ ০৮:৩২
দিনাজপুর: দিনাজপুরের হিলিতে তীব্র রোদের তাপে মাঠ শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। অনাবৃষ্টিতে আমন ধানের চারা রোপণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। রোদের কারণে বীজতলা লাল হতে শুরু করেছে। ভরা বর্ষার মৌসুমে সেচ দিয়ে জমি তৈরি করতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কৃষকেরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, হাকিমপুর উপজেলায় এবার ৮ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম থেকে চারা রোপণ শুরু হয়। কিন্তু এখন দুই সপ্তাহ ধরে দাবদাহের কারণে আবাদের জন্য তৈরি জমিগুলো শুকিয়ে গেছে। রোববার পর্যন্ত ১৫৫ হেক্টর জমিতে আমনের চারা রোপণ করা হয়েছে। অথচ গত বছর জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে এর পরিমাণ ছিল প্রায় ৫ হাজার হেক্টর।
চলতি মৌসুমে পানির অভাবে সঠিক সময়ে চারা রোপণ করতে না পারায় বীজতলাতেই তা বাড়ছে। ফলে আমন ধানের উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। তবে কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সেচযন্ত্রের মাধ্যমে চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কাদিপুর গ্রামের এনতাজ মণ্ডল বলেন, কয়েক দিন ধরে একদম বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টির জন্য আমাদের আমনের বীজতলা লাল হয়ে যাচ্ছে। চারা রোপণ করা যাচ্ছে না। আমন আবাদ হয় বৃষ্টির পানিতে, এবার সেই বৃষ্টির দেখা নাই। সেচযন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি দিচ্ছি।
ছাতনীর আব্দুল খালেক মিয়া বলেন, বিঘা দুয়েক জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করেছি। শুরুতেই পানি সেচের যে টাকা খরচ হচ্ছে, আবাদ শেষে লোকশানের মধ্যে পড়তে হবে। এখন থেকেই প্রতিবেশীর কাছ থেকে টাকা ধার করে খেতে সেচের পানি দেওয়া হচ্ছে।
আলীহাট গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, গতবছর আমার জমিগুলো আষাঢ় মাসেই আমনের চারা রোপণ শেষ হয়েছিল। এবার বৃষ্টি না হওয়ায় রোপণ করতে পারছি না।
কৃষক সোনা মিয়া জানান, জমিতে সেচ দেওয়ার পর তা নিমেষেই হারিয়ে যাচ্ছে। খরা ও প্রচণ্ড দাবদাহ অব্যাহত থাকলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। ধানের উৎপাদনও কম হবে।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ডা. মমতাজ সুলতানা বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সেচযন্ত্রের মাধ্যমে জমি তৈরি করে চারা রোপণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যমতে, আগামী সপ্তাহ থেকে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে আমন আবাদ নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা থাকবে না।
সারাবাংলা/এএম