বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নিজের দায়িত্ব নিজেকে পালনের আহ্বান
২০ জুলাই ২০২২ ২১:৫১
ঢাকা: নিজের কাজটুকু ঠিকমতো না করলেও একে অন্যের ওপর দায় চাপানোর অভ্যাসের ফলে আমাদের শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে না। তাই সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যক্তিরও দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।
বুধবার (২০ জুলাই) হাজারীবাগের ঝাউচরে বারসিক আয়োজিত পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বক্তারা এসব কথা বলেন। এসময় তারা বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কথা সবাই বলে। কিন্তু আমরা বরাবরই অন্যকে এ কাজ করতে বলতে যতটা পটু, নিজেরা সেই দায়িত্ব ততটা পালন করি না। এ কারণে আমাদের চারপাশ অপরিচ্ছন্ন থাকে। সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যক্তিরও দায়িত্ব রয়েছে।
ঢাকার হাজারীবাগে হাজী আব্দুল আওয়াল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। পরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে ঝাউচর বাজারে একটি সচেতনতামূলক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় শতাধিক মানুষ সচেতনতামূলক বিভিন্ন ফেস্টুন নিয়ে স্লোগানসহ র্যালিতে অংশ নেন।
র্যালি শেষে স্কুলটিতে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে স্কুল আঙিনায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব ময়লা আবর্জনা সরানো হয়। এরপর স্কুলের মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভা থেকে পরিচ্ছন্নতার স্মারক হিসেবে স্কুল ও কমিউনিটির অংশগ্রহণকারীরা সাদা কাপড়ে হাতের ছাপ দিয়ে সংহতি জানান।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সেলিম মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ও অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন ব্র্যাকের অভিবাসন ও ইয়ুথ প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, বস্তিবাসী নেতা হারুন অর রশিদ, আলমগীর হোসেনসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার ফেরদৌস আহমেদ। ক্লিন কমিউনিটি ক্যাম্পেইন থেকে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, সিনিটাইজার, ফ্লাইয়ারসহ নানান সামগ্রী দেওয়া হয়।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনীতে শরিফুল ইসলাম হাসান বলেন, যে দেশেই যাই না কেন, সব জায়গায় দেখি মানুষ কতটা পরিচ্ছন্ন। আমরা আজ যদি শিক্ষা নেই যে আজ থেকে আমরা জাপানের মতো বা পৃথিবীর যেকোনো সভ্য দেশের মতো পরিচ্ছন্ন থাকব, তাহলে দেশ সত্যিকার অর্থেই পাল্টে যাবে। আমরা সবসময় কাজের ক্ষেত্রে, দায়িত্বেও ক্ষেত্রে অন্যের দিকে আঙুল দেখাই। কিন্তু আজ যদি আমরা নিজেরা দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করি, তবে আমাদের চারপাশ ও পুরো দেশটাই পাল্টে যাবে।
বিশেষ অতিথি পাভেল পার্থ বলেন, প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশ ভালো থাকলে আমাদের কী লাভ, আমরা কি কখনো সেটি ভেবে দেখেছি? আমাদের শিক্ষা পদ্ধতির মধ্যে পরিবেশ ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা করাটা সঠিকভাবে শেখানো হয় না। সত্যিকারভাবে চাইলে একটি স্কুলও পরিচ্ছন্নতার মডেল হিসেবে উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে। আমরা চাই দেশের প্রতিটি মানুষ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়টি খুব ভালো করে জানুক-বুঝুক এবং বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে পৃথিবীর সবচেয়ে দক্ষ মানুষে পরিণত হোক। তা করতে পারলেই আমরা দেশকে সত্যিকার অর্থেই উন্নত করতে পারব।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচির জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান শিক্ষক সেলিম মিয়া বলেন, আমরা চাই আগামীতে আমাদের শিক্ষার্থীরা এ কাজগুলো নিজেরা করবে এবং আশপাশের মানুষদের সচেতন করবে।
কর্মসূচিতে আরও অংশ নেন বারসিকের সাবিনা নাঈম, কামরুন নাহার, ইয়ুথ প্রতিনিধি হেনা আক্তার রুপা, পূজা রানীসহ অন্যরা। ইউএসএআইডি’র অর্থায়নে প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটস (পার) কর্মসূচিটি কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের কারিগরি সহযোগিতায় স্থানীয় সংস্থা দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) তার কনসোর্টিয়াম সদস্যদের (বারসিক, কাপ ও ইনসাইট্স) নিয়ে ঢাকা কলিং প্রকল্প কাজ করছে।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর