অর্থনীতিতে মধ্যমেয়াদী সংকটের আশঙ্কা সিপিডির
২৪ জুলাই ২০২২ ১৫:৪৪
ঢাকা: বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনৈতিক সংকট স্বল্পমেয়াদী নয় বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। এ সংকট মধ্যমেয়াদী হবে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয় বলেও মন্তব্য করেছে সিপিডি।
রোববার (২৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ: কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিং ও বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় সংগঠনটির পক্ষে এ তথ্য জানানো হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ম তামিম, সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে সিপিডি জানায়, সরকার যে উদ্যোগগুলো নিয়েছে সেগুলো ইতিবাচক, তবে পর্যাপ্ত নয়। সরকারি উদ্যোগগুলো স্বল্পমেয়াদী। মধ্যমেয়াদী সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বণ্টন, রাজস্ব, রেমিট্যান্স, দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে যে সংকট দেখা দিয়েছে তা স্বল্পমেয়াদী নয় বরং এ সংকট মধ্যমেয়াদী হবে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, বর্তমান সংকট স্বল্পমেয়াদী নয়, মধ্যমমেয়াদী। এভাবে চললে দেশ দীর্ঘমেয়াদী সংকটের দিকে যাবে। আইএমএফ বলেছে ২০২৩ সালেও অর্থনৈতিক সংকট থাকতে পারে। সেখানে শ্রীলংকার অবস্থা বেশি খারাপ বলা হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান কিছুটা ভালো হলেও সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সরকারকে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, সহজে সংকট থেকে মুক্তি মিলবে না। সরকারের বর্তমান ব্যবস্থাগুলো বেশিরভাগই স্বল্পমেয়াদী প্রকৃতির। কার্যকরী পদক্ষেপ খুঁজে বের করতে হবে। যার মধ্যে রয়েছে স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রাস্ফীতি ব্যবস্থাপনা, বর্ধিত রাজস্ব উৎপাদন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বৃদ্ধি করা।
অস্বাভাবিক খাদ্য মুদ্রাস্ফীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিপিড বলছে, সরকার ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির কথা বলছে। বাস্তবে মুদ্রাস্ফীতির হার অনেক বেশি। বিশেষ করে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার প্রকাশিত সামগ্রিক মুদ্রাস্ফীতি হারের তুলনায় অনেক বেশি। নিত্য প্রয়োজনীয় এমন অনেক খাদ্যপণ্য রয়েছে যার দাম বৃদ্ধি ৫০ শতাংশের বেশি। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর আরও বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একেএম