Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুলাই ২০২২ ১৭:০৮

ঢাকা: উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কারে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। রোববার (২৪ জুলাই) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে ও একের পর এক ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ। ফলে স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হচ্ছে। সম্প্রতি সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও খুলনার কয়রা উপজেলাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো বহু মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র। মূল বক্তব্য তুলে ধরেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল। বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মণ্ডল, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে পোল্ডার নির্মাণের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। ওই পোল্ডারকে ঘিরে তৈরি করা বেড়িবাঁধই এখন ওই অঞ্চলের বিপর্যয়ের কারণ। বাঁধ নির্মাণ করে সুমুদ্র থেকে জনপদকে বিচ্ছিন্ন করলে টিকে থাকা যাবে না। আমাদের সাগরের সঙ্গে বসবাস করা শিখতে হবে। এ জন্য ঝুঁকিতে থাকা জনপদকে রক্ষায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। একইসঙ্গে উপকূলের উন্নয়নে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।’ উপকূলের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্যে উপকূলের ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরে মোহন কুমার মণ্ডল বলেন, ‘চলতি জুলাইয়ে জোয়ারের পানির চাপে বাঁধ ভেঙে উপকুলের অনেক অঞ্চল লবণ পানিতে তলিয়ে গেছে। ওই সময়ে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল ও চট্টগ্রামের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ নানান ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন এবং সহস্রাধিক পরিবার বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। ওই সকল এলাকায় সুপেয় পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।’

মূল বক্তব্যে আরও বলা হয়, ভৌগলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্রতা, দীর্ঘমেয়াদী লবণাক্ততা, সংকটাপন্ন কৃষি, প্রভৃতির কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ওই অঞ্চলের মানুষ বাঁচার স্বপ্ন হারিয়ে ফেলছে। ওদের সেই স্বপ্ন ফিরিয়ে দিতে হবে। ওই এলাকাকে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বা জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগকে মাথায় রেখে উপকূলে স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারসহ দুর্যোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। উপকূলীয় মানুষের সুপেয় পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে উপকূলে ‘একটি বাড়ি একটি সেল্টার’ নির্মাণ করতে হবে। উপকূলের রক্ষাকবচ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।

সারাবাংরা/এএইচএইচ/পিটিএম

ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ সংস্কার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর