নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মুসলিম লীগের
২৫ জুলাই ২০২২ ১২:৪৬
ঢাকা: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাস পূর্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
সোমবার (২৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর আগারগাঁয়ে নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজা এবং মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানানো হয়। এ সময় মুসলিম লীগের ১২ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল ইসির সংলাপে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আজিজ হাওলাদার ও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ডা. হাজেরা বেগম।
অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে এতে ইসি কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতান, আনিছুর রহমান, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব হুমায়ন কবির খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
মুসলিম লীগের লিখিত প্রস্তাবে বলা হয়, আগামী দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন থেকে ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশ করা পর্যন্ত জনপ্রশাসন, তথ্য ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার সুপারিশ করছি। পাশাপাশি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত করার স্বার্থে, নির্বাচনের তিন মাস পূর্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।
মুসলিম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বদরুদ্দোজা সুজা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দলের অধীনে সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না, একথা জনগণের বড় একটি অংশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিগত ১১টি সংসদ নির্বাচনে, সংসদে একাধিকবার প্রতিনিধিত্বকারী সক্রিয় এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারের নিকট দেয়ার সুপারিশ করছি।
তিনি বলেন, বিগত কয়েকটি সংসদ নির্বাচনে ধারাবাহিক অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার কারণে সম্পূর্ণ নির্বাচন ব্যবস্থাই আজ প্রশ্নবিদ্ধ ও বিতর্কিত। জনগণ নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা হারিয়ে নির্বাচন বিমুখ হয়ে পড়েছে। সঙ্গত কারণেই অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে সকলেই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগছে। এ রকম অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব গ্রহণ করে নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কাস্টিং ভোট একান্ন শতাংশের কম হলে গণতন্ত্রের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট আসনে পুনঃনির্বাচন করতে হবে। নির্বাচনে প্রার্থীদের বেশুমার অর্থ ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। প্রার্থীর আয়- ব্যয়ের হিসাব তদন্ত করার কার্যকরি পদ্ধতি ও দল কর্তৃক প্রার্থীর মনোনয়ন প্রক্রিয়া কঠোর নজরদারির আওতায় আনার প্রস্তাব করছি।
মুসলিম লীগ সভাপতি বলেন, নির্বাচনে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে এবসেন্টি ব্যালট, মেইলিং পোলিং, এডভান্স পোলিং, অনলাইন পোলিং সিস্টেম ইত্যাদি আধুনিক নির্বাচনি পদ্ধতি চালু করার প্রস্তাব রাখছি। এতে প্রবাসী ও নির্বাচনি এলাকায় অনুপস্থিত থাকা ভোটারদের, বিশেষ করে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে নিয়োজিত ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের দ্বার উন্মুক্ত হবে। পাশাপশি ইভিএম ব্যবহার করে ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য জাতি প্রস্তুত নয়। তাছাড়া পদ্ধতিটি সারাবিশ্বের মতো আমাদের দেশেও বিতর্কিত ও এখন পর্যন্ত জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি। বিধায় বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ইভিএম ব্যবহার সমর্থন করে না।
সারাবাংলা/জিএস/এএম