Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নগরীর সড়কে আইন ভাঙার প্রতিযোগিতা


২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:৩৩

।। হাবিবুর রহমান, জ্যেষ্ঠ আলোকচিত্রী।।

ঢাকা: রাজধানীজুড়ে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে রাস্তা পারাপারে চলছে আইন ভাঙার প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রাফিক সিগনাল উপেক্ষা করে রাস্তা পার হন হাজারো পথচারী।

ফলে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে। এতে অকালে অনেকেই জীবন হারাচ্ছেন। অঙ্গহানি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন কেউ কেউ। আর দুর্ঘটনাকবলিত ব্যক্তি যদি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে তো দুঃখ-কষ্টের সীমা থাকে না।

রাজধানীর শাহবাগ, ফার্মগেট, বাংলামোটর, বনানী, ধানমণ্ডি, মিরপুর, উত্তরাসহ অধিকাংশ ফুটওভার ব্রিজের কাছে এমন চিত্র লক্ষ্য করা যায়।

বাংলামোটরে সিগনাল অমান্য করে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায় পথচারীদের। এমনকি কানে মোবাইল ফোন দিয়ে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হতে দেখা যায় অনেককে।

শুধু তাই নয়, চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পারাপার হতে দেখা গেছে কাউকে কাউকে। দৌড়ে রাস্তাপার হওয়া একজন পথচারী আশিকুর রহমান বলেন, জরুরি কাজ থাকায় ও ওভার ব্রিজ ব্যবহারে বেশি সময় লাগবে বলে দৌড়ে পার হলাম। সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য বেশি কিনা জিজ্ঞেস করলে সরি বলে চলে যান।

রাজধানীর উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট ১০০টির বেশি ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে। এর মধ্যে উত্তরসিটি করপোরেশনে রয়েছে ৫৬টি। এর বেশিরভাগই ব্যবহার করেন না পথচারীরা। চরম ঝুঁকিপূর্ণ জানার পরও ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারের বেশিরভাগ পথচারীরই চরম অনীহা।

অবশ্য পথচারীদের অভিযোগ, এসব ফুটওভার ব্রিজের অনেকগুলোই রাতের বেলা ভবঘুরে, মাদকাসক্ত ও ভ্রাম্যমাণ পতিতাদের দখলে থাকে। দিনের বেলায়ও অনেক ফুটওভার ব্রিজ ভবঘুরে, মাদকাসক্ত ও হকারদের দখলে থাকে। কোথাও গড়ে উঠেছে অঘোষিত গণশৌচাগার।

এছাড়া বিশেষ করে রাতে ছিনতাইকারীরা ওভারব্রিজ ব্যবহারকারী পথচারীদের কাছ থেকে মালামাল ছিনিয়ে নেয়। একাধিক পথচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দেড়তলা পর্যন্ত সিঁড়ি বেয়ে, আবার নিচে নামতে কষ্ট হওয়ার কারণে মানুষ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার এড়িয়ে চলেন।

এ ছাড়া যৌনকর্মী, হিজড়া, ছিনতাইকারী ও ভিক্ষুকসহ হকারদের কারণে ব্রিজের পথ সরু হয়ে যাওয়ায় গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগায় অধিকাংশ নারী ব্রিজে উঠতে চায় না। এদিকে বেপরোয়া চলাচল, পাল্লা দিতে গিয়ে এক বাসের সঙ্গে আরেক বাসের ঠোকাঠুকি, সংঘর্ষ নিত্যদিনের ঘটনা।

এ কারণে বেশিরভাগ পরিবহনের বাসের গায়ের রং চটে গেছে। খুলে গেছে বাম্পার, সংকেত বাতি। প্রায়ই ভাঙছে ভিউ মিরর। প্রতিদিনই যাত্রীরা এ রকম দৃশ্য দেখছেন। যত্রতত্র থামা, ওঠানামা করানো, ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘন, বিশৃঙ্খলা ঢাকার গণপরিবহনের সাধারণ চিত্র।

সড়ক পথে কিছুই মানছেন না চালকরা। নির্ধারিত স্টপেজে বাস না থামিয়ে হঠাৎ করেই পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে পড়ছে মাঝ সড়কে। রাস্তার মাঝে যেখানে সেখানে নামিয়ে দিচ্ছেন ও তুলছেন যাত্রীদের। অন্য বাসকে সামনে যেতে না দেওয়ায় বাসের পেছনের অংশ বাঁকা করে রাখছেন সড়কের ওপর। ঝুঁকিপূর্ণভাবে ওভারটেক করছে এক বাস অন্য বাসকে। প্রচণ্ড ঝাঁকুনি হচ্ছে। ভীতসন্ত্রস্ত যাত্রীদের আকুতি কানে তুলছেন না চালকরা। জেব্রা ক্রসিং বা ট্রাফিক সিগন্যাল তো মানছেনই না; উল্টো স্পিড ব্রেকারের ওপর দিয়ে দ্রুত গতিতে চালাতে গিয়ে ত্রাহি অবস্থা করে তুলছেন যাত্রীদের।

সারাবাংলা/এইচআর/আইএ/টিএম

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর