নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের
২৬ জুলাই ২০২২ ১১:৩৯
ঢাকা: আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটে করারও দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবি জানানো হয়।
সোমবার (২৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন ভবনে ইসির সংলাপে অংশ নিয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়। দলটির মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল ইসির সংলাপে অংশ নেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহিনুর পাশা চৌধুরী, আব্দুস কুদ্দুস কাসেমী, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জল হক আজীজ, মাওলানা মুহাম্মাদুল্লাহ জামী প্রমুখ।
অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এর সভাপতিত্বে এতে ইসি কমিশনার মো. আলমগীর, রাশেদা সুলতান, আনিছুর রহমান ও বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব হুমায়ন কবির খোন্দকার উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ একটি শতবর্ষী ঐতিহাসিক রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে দেশ ও জাতির কল্যাণে বহুমাত্রিক কাজের পাশাপাশি সৎ, দক্ষ ও বিশ্ব নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচনগুলোতে বরাবরই অংশগ্রহণ করে আসছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আমরা অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী, তবে এর জন্য সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা দূর করে যথোপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা অপরিহার্য বলে মনে করি।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার সংরক্ষণ করা মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম চেতনা, যেহেতু একটি কল্যাণকর আদর্শ রাষ্ট্র বিনির্মাণে এই ভোটাধিকারের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ছাড়া যেহেতু দুর্নীতির মূলোৎপাটন সম্ভব নয়, তাই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন অবাধ, অর্থবহ, নিরপেক্ষ ও ত্রুটিমুক্ত নির্বাচনের আয়োজন করতে সাংবিধানিক ভাবেই দায়বদ্ধ।
মহাসচিব বলেন, সকল দলের সমান সুযোগ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরী) নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচনকে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করতে এবং সংঘাত-সহিংসতা এড়াতে প্রতীক বরাদ্দ থেকে নির্বাচন পরবর্তী এক সপ্তাহ পর্যন্ত প্রার্থী,সমর্থক ও ভোটারদের নিরাপত্তা বিধানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের নারী-পুরুষ ভোটার জনতার অধিকাংশই প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোট প্রদানে অভ্যন্ত নয়, বিধায় ইভিএমের পরিবর্তে ব্যালটেই ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকল প্রার্থীর এজেন্টগণের উপস্থিতিতে ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণার আইন শতভাগ কার্যকর করতে হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়াকে নিরুৎসাহিত না করে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর জমা দেওয়ার আইন বাতিল করার প্রস্তাব করছি। ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থা প্রবর্তন করে প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদেরকে ভোট প্রদান প্রক্রিয়ার আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সঙ্গত কারণে এ দেশে ইসলামী রাজনীতির চর্চা থাকাটা খুব স্বাভাবিক। সুতরাং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাহীন ও জনসমর্থনহীন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের আবেদন জানাচ্ছি।
সারাবাংলা/জিএস/এএম