গ্যাস সংকটে হবিগঞ্জের অর্ধেক ফিলিং স্টেশন বন্ধ
২৬ জুলাই ২০২২ ২২:১৭
হবিগঞ্জ: গ্যাস সংকট নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জ। গ্যাসের নির্ধারিত মাসিক বরাদ্দ শেষ হওয়ায় হবিগঞ্জের আটটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মধ্যে চারটিই বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে তৈরি হয়েছে গ্যাসের তীব্র সংকট। যানবাহনগুলোকে চাহিদার অর্ধেকেরও কম গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি হওয়ায় জনজীবনে চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গ্যাসের নির্ধারিত মাসিক বরাদ্দ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে হবিগঞ্জের চারটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন। এ মাসের শেষ, তথা ৩১ জুলাই পর্যন্ত এসব ফিলিং স্টেশন বন্ধ থাকবে।
অর্ধেক ফিলিং স্টেশনই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্যাসের তীব্র সংকটে পড়েছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন। চাপ বেড়েছে খোলা থাকা চারটি স্টেশনের ওপর। সেসব স্টেশন থেকেও যানবাহনগুলোকে চাহিদার তুলনায় অর্ধেকের চেয়েও কম গ্যাস দেওয়া হচ্ছে। ফলে যানবাহনগুলোও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় চলতে পারছে না।
এদিকে, পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্যাস না পাওযায় বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যানবাহনের ভাড়াও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এ নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে হবিগঞ্জ।
স্থানীয় সিএনজিচালক রুবেল মিয়া জানান, মাত্র একশ টাকার গ্যাস সিএনজি অটোরিকশায় দেওয়া হয়। এই গ্যাস দিয়ে এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাতায়াত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, আমরা কী খাব আর মালিককে কী জমা দেবো? আমরা তো চলার কোনো উপায় দেখছি না।
আব্দুর রহিম নামে আরেক চালক বলেন, চারটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে বিপাকে পড়েছি। গাড়িতে গ্যাস না থাকার কারণে যাত্রী পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ফিলিং স্টেশনগুলো যতদিন বন্ধ থাকবে, সে কয়েকদিন তো না খেয়ে থাকার দশা হবে।
যে চারটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধ হয়ে গেছে, তার একটি শায়েস্তাগঞ্জের জিএস ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশন। জানতে চাইলে সেখানকার সহকারী ম্যানেজার রুবেল মিয়া জানালেন, আমাদের প্রতি মাসেই গ্যাস বিক্রির টার্গেট থাকে। এর বেশি গ্যাস পাই না। জুলাই মাসে যে টার্গেট ছিল, সেটি পূরণ হয়ে যাওয়ায় স্টেশন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ৩১ জুলাই বন্ধ বন্ধ থাকার পর ১ আগস্ট থেকে ফের ফিলিং স্টেশন চালু করা হবে। এখন আমরাও বেকার সময় কাটাচ্ছি।
হবিগঞ্জ শহরের ইন্ট্রাকো সিএনজি ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ ওয়াসকুরনীও বললেন গ্যাস বিক্রির সীমার কথা। তিনি বলেন, আমাদের একটা লিমিট দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী মাস শেষ করতে হবে। চারটি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন আমাদের এখানে অনেক চাপ বেড়েছে। বাধ্য হয়েই যানবাহনগুলোকে কম গ্যাস দিতে হচ্ছে।
ওয়াসকুরনী বলেন, প্রতিটি সিএনজি অটোরিকশাকে একশ টাকা ও মাইক্রোবাসে তিনশ টাকার গ্যাস দিয়ে যতটাসম্ভব সব ধরনের যানবাহনকে গ্যাস দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়ছে। যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় হবিগঞ্জ জালালাবাদ গ্যাস অফিসের ম্যানেজার মুরাদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি গ্যাস সরবরাহে এই সংকট নিয়ে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।
সারাবাংলা/টিআর