Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শিগগিরই শুরু হচ্ছে বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুলাই ২০২২ ১২:৩০

ফাইল ছবি

ঢাকা:  আগস্টের মাঝামাঝি থেকে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরুর কথা থাকলেও তা আরও আগে শুরু হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আজ বুধবার (২৭ জুলাই) থেকে খনির নতুন কূপ থেকে পরীক্ষামূলক কয়লা উত্তোলন শুরু হচ্ছে। এর ফলে কয়লা সংকটের কারণে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের যে আশংকা তৈরি হয়েছিল তা আপাতত দুর হচ্ছে।

সূত্রমতে, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ১৩১০ নম্বর কূপে মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ প্রক্রিয়া শুরু হয় গত ১ মে থেকে। মে মাস থেকেই খনিটি থেকে কয়লা উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলন করতে হলে পুরাতন কূপ থেকে যন্ত্রপাতি নতুন কূপে স্থানান্তর করতে হয়। এ কাজে দুই থেকে তিন মাসের মতো সময় লাগে। এবার নতুন কিছু যন্ত্রপাতি আসার কারণেও নতুন কূপে কাজ শুরু করতে চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগার কথা ছিল। যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও নতুন কূপে স্থাপনের কাজ করছে চীনা কোম্পানি সিএমসি-এক্সএমসি।

নতুন কূপ থেকে আগস্টের মাঝামাঝি থেকে কয়লা উত্তোলন শুরুর কথা জানিয়েছিল চীনা কোম্পানিটি। কিন্তু অন্যদিকে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য কয়লার মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এতে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়। দেশে জ্বালানি সংকটে উত্তরাঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গেলে বিদ্যুতের সংকট আরও তীব্র হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ঝুঁকি এড়াতে সময়সীমার আগেই নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু হচ্ছে।

জানা গেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৩০৬ নম্বর কূপ থেকে কয়লা উত্তোলনে যেতে চায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল)। বিসিএমসিএল সূত্র জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে এরইমধ্যে চীনা ঠিকাদারি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা শেষ হয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আশংকার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিসিএমসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকার সারাবাংলাকে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা চিন্তা করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব প্রক্রিয়া শেষ করে আশা করছি আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই উত্তোলন কাজ শুরু করা যাবে।

বিজ্ঞাপন

দেশের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক রাখতে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের বিকল্প নেই। বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে এমন সময় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যখন বৈশ্বিক জ্বালানি সংকটে দেশের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন কমিয়ে লোডশেডিং করে সমন্বয় করা হচ্ছে।

বড় পুকুরিয়া তাপবিদ্যুকেন্দ্র থেকে বর্তমানে দৈনিক ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, এতে দৈনিক দুই হাজার টন কয়লার ব্যবহার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে যে পরিমাণ কয়লার মজুত আছে তা দিয়ে দশ দিনের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। এর মধ্যে কয়লা না পাওয়া গেলে কেন্দ্রটি বন্ধ রাখতে হবে।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উত্তোলিত কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৬ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়। ১২৫ মেগাওয়াট করে দুইটি ইউনিটে মোট ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটি উত্তরাঞ্চলের একমাত্র কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। পরবর্তীতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ২০১৫ সালে আরও ২৭৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ২০১৭ সালে নতুন ইউনিট উৎপাদনে আসে। কিন্তু কয়লা স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কখনোই পূর্ণসক্ষমতায় চালু রাখা সম্ভব হয়নি।

সারাবাংলা/জেআর/আইই

বড়পুকুরিয়ায় কয়লা উত্তোলন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর