Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অকটেন-পেট্রোল আমাদের কিনতে হয় না: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুলাই ২০২২ ১৬:১৩

ঢাকা: দেশে জ্বালানি তেলের সংকট নিয়ে সম্প্রতি যে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে তার জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ডিজেল আমাদের কিনতে হয় এটা ঠিক, কিন্তু অকটেন আর পেট্রোল আমাদের কিনতে হয় না। আমরা যে গ্যাস উত্তলন করি সেখান থেকে বাই প্রোডাক্ট হিসেবে রিফাইন করা পেট্রোলও পাই, অকটেনও পাই। বরং যতটুকু চাহিদা তার থেকে অনেক বেশি পেট্রোল এবং অকটেন ‍আমাদের আছে। এগুলো অনেক সময় বাইরে বিক্রিও করি।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সরকার প্রধান এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন করোনাভাইরাস থেকে একটু উত্তরণ ঘটাতে যখন আমরা চেষ্টা করছি, তখন শুরু হয়ে গেলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এর পাশাপাশি দেওয়া হলো স্যাংশন। পাল্টাপাল্টি স্যাংশন দেওয়ার ফলাফল সারাবিশ্বে খাদ্য ঘাটতি। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের অভাব, ভোজ্য তেলের অভাব। সারাবিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি রক্ষা করতে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটা দেশে এই দৃশ্য। বাংলাদেশে যেন এরকম দৃশ্য না আসে সেজন্য আগাম পদক্ষেপ নিয়েছি। সবাইকে আহ্বান করেছি বিদ্যুতে সাশ্রীয় হতে, পানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে। নিজেদের সঞ্চয় নিজেদের করতে হবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। তার ঢেউ থেকে বাংলাদেশ বাদ যাচ্ছে না, যায় না। আমদানি নির্ভর পণ্যে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। বিদ্যুতে ভর্তুকি দিচ্ছি, জ্বালানিতে ভর্তুকি দিচ্ছি। ভর্তুকি দিয়েই যাচ্ছি। তারপরও আমাদের লক্ষ্য উৎপাদন যেন অব্যাহত থাকে।’

তিনি বলেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছি যার যেখানে যতটুক জায়গা আছে চাষাবাদ করবেন।যার যতটুক জমি আছে উৎপাদন করতে পারবেন। উদ্বৃত্ত হলে অন্য দেশে সহযোগিতা করতে পারব।’

সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার প্রসঙ্গ পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিদ্যুৎ দিয়েছি সত্য। যেহেতু বিশ্বব্যাপী মন্দা দেখা দিয়েছে। উন্নত দেশগুলো বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হচ্ছে। মহাবিপদে যাতে না পড়ি সেজন্য আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। সে কারণে পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা সাশ্রয়ী হবার চেষ্টা করছি। বিদ্যুতে পদক্ষেপ নিচ্ছি। এর মানে এই না যে, বিদ্যুৎ একেবারে নাই বা শেষ হয়ে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘কিছু কিছু জ্ঞানী মানুষ আছেন, যারা মাঝে মাঝে অনেক কথা বলে বেড়ায়’— শেখ হাসিনা তাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘তাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার এত বেশি যে, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস তারা ভুলে যান। ‍কিন্তু উল্টাপাল্টা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চান। পাশাপাশি আমাদের রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। ২০০১-২০০৬ বিএনপি যখন ক্ষমতায় তখন রিজার্ভ কত ছিল? তিন বিলিয়নের কিছু উপরে; ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন। আওয়ামী লীগ সরকারের আসার পর আমরা যখন সরকার গঠন করি ২০০৯ সালে কিছুটা বেড়েছিল। যেখানে মাত্র ৭ বিলিয়নের মতো পেয়েছিলাম। সেখান থেকে ৪৮ বিলিয়ন পর্যন্ত রিজার্ভ বাড়াতে সক্ষম হয়েছিলাম। করোনাকালীন আমাদের আমদানি বন্ধ ছিল। এরপর আমদানি করতে হয়েছে। আমদানি করতে যেয়ে এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য আমাদের রিজার্ভ খরচ করতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘তাছাড়া আমরা যে ভ্যাকসিন কিনে দিয়েছি, এই যে বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিলাম, বিনা পয়সায় টেস্টিং— সেখানে তো প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হয়েছে। এমনকি একটা ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ থেকে যা যা দরকার সেগুলোও তো বিদেশ থেকে কিনে আনতে হয়েছে। শুধু কেনা নয়, আমাদের বিমান পাঠিয়ে বিদেশ থেকে আনতে হয়েছে। সেখানে বিরাট অংকের টাকা খরচ করেছি।’

আমাদের আমদানিগুলো সমস্ত ক্যাপিটাল মেশিনারিজ- এটা মাথায় রাখতে হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ক্যাপিটাল মেশিনারিজ দিয়ে যে সমস্ত শিল্প গড়ে উঠবে সেখানে যখন প্রোডাকশনে যাবে সেখানে তো আমাদের দেশের মানুষই লাভবান হবে। এটা তো সহজ। এই খরচ তো আমাদের করতেই হবে।’

স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের মানুষের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনকে সুসংগঠিত করে একটি ডিসিপ্লিন ফোর্স হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

অকটেন ডিজেল পেট্রোল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর