Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে বন্ধুকে হত্যা; র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুলাই ২০২২ ১৬:৩৭

ঢাকা: ইমন রহমান, রাশেদুল ইসলাম রাসু ও বিপুল চন্দ্র বর্মণ। তিনজনই একই স্কুলের শিক্ষার্থী আবার একসঙ্গে মাদক কেনা ও সেবনের সঙ্গে জড়িত গত তিন বছর ধরে। সম্প্রতি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ইমনের সঙ্গে রাসুর বিরোধ চরমে ওঠে। ইমনের বিরুদ্ধে জমা ক্ষোভ আর প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে রাশেদুল ইসলাম রাসু গত ৭ জুলাই রাতে ইমনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দেয়।

সাভার থানার আমিনবাজার এলাকায় তুরাগ নদী থেকে ইমন রহমানের মরদেহ উদ্ধারের পর ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং মূল পরিকল্পনাকারী রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসুসহ দুজনকে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১ এর একটি দল।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুর দেড়টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ১৬ জুলাই বিকেলে সাভারের আমিন বাজার কেবলার চর এলাকার তুরাগ নদীতে ভাসমান অবস্থায় একটি মরদেহ নৌ-পুলিশ উদ্ধার করে। ওই মরদেহের মৃত্যু রহস্য এবং প্রকৃত ঘটনা উন্মোচনের জন্য র‌্যাব-১ ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, গত ৭ জুলাই রাতে গাজীপুর কালিয়াকৈর রসুলপুরের আজিবর রহমানের ছেলে ইমন রহমান (২১) রাতের খাবার খেয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসা থেকে বের হয়। প্রথমে ঘটনাটি স্বাভাবিক মনে হলেও ইমনের বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ার কারণে পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পাঁচ দিন ইমনের কোনো সন্ধান না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। গত ১৬ জুলাই আমিন বাজার কেবলার চরে তুরাগ নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা নৌ-পুলিশকে খবর দেয়। পরে মরদেহটি কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ইমন রহমানের বলে শনাক্ত করে।

বিজ্ঞাপন

উদ্ধার করা মরদেহ সম্পূর্ণ পচে যাওয়ায় হত্যাকাণ্ড নাকি দুর্ঘটনা তা তাৎক্ষণিকভাবে অনুমান করা সম্ভব ছিল না। তবে ইমনের পরিবার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার সহায়তায় তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানাধীন আবাদপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে আত্মগোপনে থাকা রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসু (২২) ও তার অন্যতম সহযোগী বিপুল চন্দ্র বর্মণ (১৯) কালিয়াকৈর থানাধীন কালামপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এসময় রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাসুর বাড়ির বিছানার নিচ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ১টি দা এবং বিপুল চন্দ্র বর্মণের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ইমনকে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়।

হত্যার ঘটনা সম্পর্কে র‌্যাব-১ এর সিও বলেন, রাশেদুল ইসলাম রাসু, বিপুল চন্দ্র বর্মণ ও নিহত ইমন একই স্কুলে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী। ৫-৭ বছর ধরে পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত তারা। তবে গত ২-৩ বছর ধরে এক সঙ্গে মাদক সেবন করত। ইমনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ ছিল রাসুর। সম্প্রতি প্রেমঘটিত বিষয় নিয়ে ইমনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছে। রাসু চার সহযোগীসহ ইমনকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাসু গত ৭ জুলাই রাতে ফোন করে ইমনকে বাড়ির পাশে বট গাছতলায় আসতে বলে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সেখানে রাসু, বিপুলসহ অন্য অভিযুক্তরা আগে থেকেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিল। ইমন সেখানে পৌঁছালে তার প্রেমিকাকে গালিগালাজ শুরু করে রাসু। এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাসু দা দিয়ে ইমনকে কোপ দেয়। এ সময় অন্যরাও ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইমনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। পরে ইমনকে তুরাগ নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে চলে যায় তারা। এ ঘটনায় গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। হত্যায় জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সারাবাংলা/ইউজে/এসএসএ

টপ নিউজ বন্ধুকে হত্যা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর