Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারামাস কাজের চেয়ে একদিনের ডাকাতিতে বেশি লাভ!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৭ জুলাই ২০২২ ১৭:৪৪

ঢাকা: ডাকাত দলের সদস্যরা গ্রেফতারের পর জেলখানায় বসেও সংঘবদ্ধ হচ্ছে। করোনাকালীন তারা বেরিয়ে এসে আগের কাজেই হাত দিচ্ছে। সকালে গার্মেন্টেসে গিয়ে রাত পর্যন্ত কাজ করে কয় টাকা বেতন পাওয়া যায়। এ ছাড়া সারামাস কাজ করার চেয়ে মাসে একটি ডাকাতিতে বেশি লাভ। এ সব কথা বলে ডাকাত দলের সরদাররা অন্য সদস্যদের উৎসাহ দেন।

ঢাকার ভেতরে মিডর্ফোট, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল। এই আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান সুমন চৌকিদার। সে ডাকাতি করতে গিয়ে দোকান কর্মচারীকে হত্যাও করেছে। তারা দুধর্ষ ডাকাতি করতে গিয়ে খুনও করেছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে রাজধানীর কোতয়ালী থানাধীন মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ১১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবির লালবাগ বিভাগের কোতয়ালী জোনাল টিম।

বুধবার (২৭ জুলাই) বেলা ১২টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এ তথ্য জানান।

এ সময় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার রাজীব আল মাসুদ, উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার সাইফুল আলম মুজাহিদ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত ও সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু তালেব উপস্থিত ছিলেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন সুমন চৌকিদার সুমন মিয়া, মোস্তফা, আরিফ হোসেন, পলাশ, করিম, হাসান, রিপন আকাশ, জয়নাল আবেদিন, ওমর ফারুক ফয়সাল, রাসেল ও হাফিজুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ৭.৬৫ বোরের বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, দুই রাউন্ড ৭.৬৫ বোরের গুলি, একটি বড় ছোরা, একটি রামদা, ২টি লোহার তৈরি চাপাতি, পুরাতন পাটের রশি, একটি পুরাতন গামছা ও ৫টি সিএনজি ও একটি পিকআপ উদ্ধার করা হয়।

হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে তারা কোতয়ালী থানাধীন মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে জড়ো হয়েছিল। গ্রেফতাররা পিস্তল, দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করে বিভিন্ন জেলায় জুয়েলারি দোকান, মালবাহী ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস, সিএনজি ও টার্গেটকৃত লোকজনদের জিম্মি করে ডাকাতি করে আসছিল।’

ডিবি প্রধান বলেন, ‘গ্রেফতাররা সবাই পেশাদার ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন জেলার মহাসড়কে ডাকাতি করেছে বলে স্বীকার করেছে। ইতোপূর্বে গ্রেফতার আসামিরা অসংখ্য ডাকাতি সংঘটিত করেছে।’

এই ডাকাত দলের সরদার সুমন চৌকিদার অরফে সুমন মিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলোয় খুন, ডাকাতি, দস্যুতাসহ ১৬টি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে ৫টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। এ ছাড়া গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। মামলা দুটির তদন্ত অব্যহত আছে।

কীভাবে তারা অস্ত্র পেল এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, ‘তাদের অধিকতর জিজ্ঞাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হবে। এ সময় আরও তথ্য পাওয়া যাবে। এ ছাড়া তাদের নামে কার কয়টি মামলা আছে সেটাও জানা যাবে। এর আগেও গাবতলী ও সাভার থেকে একাধিক ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই দলটি পুরান ঢাকা, মিরপুর, নারাণগঞ্জ ও গাজীপুর এলাকায় অপরাধ করে আসছিল।’

এরা স্বর্ণের দোকান, যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাকে ডাকাতি করত। গত দুই মাসে অনেক ডাকাত গ্রেফতার করেছে ডিবি। তারপরে তারা জামিনে বেরিয়ে এসে আবার সেই কাজ করছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশের টহল পার্টি ও ডিবি টিম নিয়মিত অভিযান চালায় বলে এটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ডাকাতি বন্ধ হয়ে গেছে কিনা বলতে পারব না। কিন্ত ডিবি টিম যে কাজ করছে এটা স্পষ্ট হয় এসব অভিযানে।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

ডাকাতি ডিবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর