চাকরি না পাওয়ার শঙ্কায় ৭৮% শিক্ষিত তরুণ: গবেষণা
২৭ জুলাই ২০২২ ২৩:৫৩
ঢাকা: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে চাকরির বাজারে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জিত হচ্ছে না, এমনটিই মনে করছেন দেশের তরুণরা। এর ফল হিসেবে ৭৮ শতাংশ শিক্ষিত তরুণই চাকরি না পাওয়ার শঙ্কায় ভুগছেন। তবে এসব তরুণদের মধ্যে যারা ধনী পরিবারের, তাদের মধ্যে এই আশঙ্কা অনেক কম।
বুধবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ‘যুব জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক ঝুঁকির উন্নয়ন নীতি এবং বরাদ্দ পরিকল্পনা’ শীর্ষক গবেষণাটি চালিয়েছে অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সানেম’ ও উন্নয়ন সংস্থা ‘অ্যাকশন এইড, বাংলাদেশ’।
অনুষ্ঠানে গবেষণা প্রবন্ধটি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক শাকিল আহমেদ। গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে তরুণদের মধ্যে শিক্ষাসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য রয়েছে। বৈষম্য রয়েছে কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, ডিজিটাল সেবা ও সামাজিক মূল্যবোধের মতো বিষয়গুলোতেও। বিশেষ করে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে এই বৈষম্য প্রকট হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় সরকার সতর্ক রয়েছে’
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বেকার ৭৮ শতাংশ শিক্ষিত তরুণ মনে করেন, তারা চাকরি পাবেন না। তবে দরিদ্র পরিবারের শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে এই হার ৮৯ শতাংশ। ধনী পরিবারের শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে অবশ্য মাত্র ১৯ শতাংশ এমন আশঙ্কায় ভুগছেন।
এমন আশঙ্কার পেছনে দক্ষতার ঘাটতির বিষয়টি উঠে এসেছে গবেষণায়। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যেসব দক্ষতা তরুণরা অর্জন করেন, তা চাকরির বাজারে প্রয়োজনীয় দক্ষতার সঙ্গে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে শিক্ষিত তরুণ যারা আছেন, তাদের মধ্যে দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশের অনুষ্ঠানে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, তরুণরা যে আশঙ্কা ও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন, তা দূর করতে হলে তাদের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দিতে হবে। উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়ন করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সাংস্কৃতিক খাতে তরুণদের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে। কিন্তু এমন কোনো উদ্যোগ আমরা দেখছি না।
দেশের উন্নয়নে তরুণদের অবদান প্রসঙ্গে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই। সেটি করতে হলে শিল্প খাতে এগিয়ে যেতে হবে, যেখানে তরুণরা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
তবে উন্নয়ন নীতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশ না হতে আহ্বান জানান মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। বলেন, কোনো দেশই সব নীতি শতভাগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পারে না। তবে তরুণদের উন্নয়নে আমরা অনেকগুলো নীতিমালা করেছি। সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। তাই তরুণদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই।
অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের যুব উন্নয়ন বিভাগের যুগ্মসচিব আবদুল লতিফ মোল্লা, উপসচিব জহিরুল ইসলাম, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব লুতফর রহমান, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফারাহ কবিরসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/টিআর