Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্যাংকে যাচ্ছে জাল টাকা: জড়িত সাবেক পুলিশ সদস্য-অসাধু ব্যাংকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ জুলাই ২০২২ ১৬:০৩

ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র রাজধানীতে জাল টাকার কারবার করে আসছিল। এই চক্রটির মূলহোতা মো. হুমায়ুন কবির (৪৮)। তিনি পুলিশের একজন চাকরিচ্যুত সদস্য। তার নেতৃত্বে এবং ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে জাল টাকা চলে যেত ব্যাংকে। এ পরিস্থিতিতে যারা ব্যাংকে টাকা লেনদেন সময় ভালো করে চেক করে এবং মেশিনে যাচাই-বাছাই করে টাকা লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছে ডিবি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিম বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ চক্রের মূলহোতা মো. হুমায়ুন কবিরকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে। গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) রাতে মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে ১৬ লাখ জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ, একটি প্রিন্টার, একটি লেমিনেশন মেশিন, একটি পেস্টিং গামের কৌটা, তিনটি টাকা তৈরির ডাইস, দুই বান্ডেল ফয়েল পেপার, দুই প্যাকেট টাকা তৈরির কাগজ ও দুইটি মোবাইল জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

তিনি বলেন, এই চক্রটি ব্যাংকে টাকা জমা দিতেন অতিরিক্ত ভিড়ের মধ্যে। মূলত ইদ ও অন্যান্য উৎসবের আগে ব্যাংকে যখন অতিরিক্ত ভিড় হত, সে সময় ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে মূলত জাল টাকাগুলো ব্যাংকে জমা দিতেন।

ব্যাংকের কোন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কতদিন ধরে এই চক্রটি জাল টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে আসছিল?— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাকে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞেস করি, এই জাল টাকাগুলো কোথায় কোথায় দেন। তিনি জানান, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গী এলাকায় চক্রের এজেন্টদের কাছে জাল টাকাগুলো সাপ্লাই করতেন। আবার ব্যাংকে যখন প্রচুর ভিড় হতো তখন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জাল টাকা ব্যাংকে জমা দিতেন।

বিজ্ঞাপন

কোন কোন ব্যাংকে জাল টাকা দিয়েছেন তারা। এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবিপ্রধান ব্যাংকগুলোর নাম জানাননি।

গ্রেফতার হুমায়ুন কবির এক সময় পুলিশে চাকরি করতেন। এই অবৈধ কাজে তিনি চাকরিচ্যুত হয়েছেন কি না— জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘কোনো একসময় তিনি পুলিশের চাকরি করতেন। এখন তিনি জাল টাকা তৈরি করছেন। তাই বলে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ছাড় দিচ্ছে না। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। অবৈধভাবে কেউ বড়লোক হতে চাইলে তাকেও আমরা আইনের আওতায় আনব।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানিয়েছেন, তারা জাল টাকা পাচারও করতেন। তাদের এই পাচারের সত্যতা আছে কি না সেটিও আমরা যাচাই-বাছাই করছি বলেও উল্লেখ করেন গোয়েন্দা প্রধান।

তিনি আরও বলেন, ‘তারা মূলত ইদকে টার্গেট করে এই জাল টাকা তৈরি করে থাকে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি আসন্ন পূজাকে কেন্দ্র করে মাসে ৬০ লাখ টাকা রোলিং করার টার্গেটে এখন থেকেই তারা কাজ শুরু করেছে।’

গ্রেফতার হুমায়ুন কবির মোহাম্মদপুরে ভাড়া নেওয়া বাসায় জাল টাকা বানানোর কারখানা হিসেবে ব্যবহার করে জাল টাকা তৈরি করে আসছিল। তার অন্যান্য সহযোগীরা পলাতক রয়েছেন। এছাড়া গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে ৪টি জাল টাকার মামলা রয়েছে। চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

জাল টাকা টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর