ঢাকা: মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদার ওরফে মিল্টনের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
লালবাগ থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. হেলাল উদ্দিন জানান, দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামির জামিন নাকচ করেন।
এর আগে, গত ২৪ জুলাই রাতে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হন মিল্টন। পরদিন ২৫ জুলাই তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি নিয়ে মিল্টনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন- চাকরির প্রশ্নপত্র ফাঁস: মাউশির কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর কারাগারে
এসআই হেলাল উদ্দিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল বুধবার (২৭ জুলাই) আদালতে উপস্থিত করা হয় মিল্টনকে। তাকে কারাগারে পাঠিয়ে তার জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আজকের (বৃহস্পতিবার) তারিখ নির্ধারণ করে দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) বলছে, কয়েক মাস ধরে মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি। শুরুতেই চন্দ্র শেখর হালদারের জড়িত থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছিল। তিনি মাউশির একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হওয়ায় তার মোবাইল সিম কার্ডের ভেরিফিকেশন, কল রেকর্ড যাচাই-বাছাই এবং তার সম্পর্কে এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের বক্তব্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার চন্দ্র শেখরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চন্দ্র শেখর হালদার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
মাউশিতে ৫১৩টি পদে নিয়োগের জন্য রাজধানীর ৬১টি কেন্দ্রে নিয়োগ পরীক্ষা হয় গত ১৩ মে। ওই পরীক্ষায় প্রার্থী ছিলেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৯৪ জন। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় লালবাগ থানায় মামলা হয়। ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক আবদুল খালেক বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আরও পড়ুন- চাকরির প্রশ্নপত্র ফাঁস: মাউশির কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর গ্রেফতার
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে পরীক্ষা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে পরীক্ষার্থী সুমন জোয়াদ্দার নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জোয়াদ্দার জানান, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দুপুর ২টা ১৮ মিনিটে তার মোবাইল ফোনে উত্তরপত্র পাঠান পটুয়াখালীর সাইফুল ও টাঙ্গাইলের খোকন।
ওই মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হলেন— পটুয়াখালী সরকারি কলেজের প্রভাষক (৩৪তম বিসিএস) রাশেদুল ইসলাম, মাউশির উচ্চমান সহকারী আহসান হাবীব, অফিস সহকারী নওশাদুল ইসলাম, খেপুপাড়া বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ও পরীক্ষার্থী সুমন জমাদ্দার। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় মাউশি ওই পরীক্ষা বাতিল করেছে।