টানা দরপতন: পুঁজিবাজারে ফিরল ফ্লোরপ্রাইস
২৮ জুলাই ২০২২ ১৯:১১
ঢাকা: পুঁজিবাজারে দরপতন ঠেকাতে প্রায় আড়াই বছর পর ফিরল ফ্লোরপ্রাইস পদ্ধতি, যার মাধ্যমে শেয়ারের দামের সর্বনিম্ন সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে চলে এলে ফ্লোরপ্রাইস কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিএসইসি এক আদেশে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ফ্লোরপ্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সবশেষ পাঁচ কার্যদিবসে শেয়ারের যে দাম ছিল, তার গড় হবে ফ্লোরপ্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য। আর এই ফ্লোরপ্রাইস কার্যকর হবে আগামী রোববার (৩১ জুলাই) থেকে।
এদিকে, ফ্লোরপ্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি ‘সার্কিট ব্রেকার’ও তুলে দিয়েছে বিএসইসি। সার্কিট ব্রেকার নিয়মের আওতায় কোনো শেয়ারের দাম এক দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ পর্যন্ত কমার সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সই করা এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চলমান ক্ষতি থেকে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় নতুন করে করে প্রতিটি সিকিউরিটিজের ফ্লোরপ্রাইস আরোপ করা হলো। ফ্লোরপ্রাইসের দর নির্ধারণ করা হবে সবশেষ ৫ দিনের ক্লোজিং প্রাইসের ওপর ভিত্তি করে। আর নতুন শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রথম দিনের লেনদেনের ক্লোজিং প্রাইসকে ফ্লোরপ্রাইস হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লোরপ্রাইস নির্ধারণের ফলে রোববার থেকে শেয়ারের দাম ওঠানামা করতে পারবে স্বাভাবিক হারে। তবে কোনো শেয়ারের দামই ফ্লোরপ্রাইসের নিচে নামতে পারবে না। ফলে পুঁজিবাজারে কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
এর আগে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর ৩ হাজার ৬০৪ পয়েন্টে নেমে আসে ডিএসইএক্স। এ পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের ১৯ মার্চ পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে ফ্লোরপ্রাইস বেঁধে দিয়েছিল বিএসইসি। বাজার স্বাভাবিক হতে থাকলে এক বছরেরও বেশি সময় পর ২০২১ সালের ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানির শেয়ার থেকে ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। পরে ৩ জুন ফ্লোরপ্রাইস প্রত্যাহার করা হয় আরও ৩০ কোম্পানির শেয়ার থেকে। সবশেষ ১৭ জুন ফ্লোরপ্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ন দামের সীমাটি একেবারে প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে, গত অক্টোবরে ডিএসইর প্রধান সূচকটি ৭ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করার পরও এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফের পুঁজিবাজার অস্থির হতে শুরু করে। সবশেষ আজ বৃহস্পতিবার ডিএসইএক্স ৫৭ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯৮০ পয়েন্টে নেমে আসে। ২০২১ সালের ৭ জুন ৫ হাজার ৯৭৫ পয়েন্টে নেমে যাওয়ার পর থেকে আর কখনো এই সূচক এত কমে নেমে আসেনি। এ পরিস্থিতিতেই ফ্লোরপ্রাইস চালু করল বিএসইসি।
সারাবাংলা/টিআর