ঢাকায় হবে উজবেকিস্তানের দূতাবাস, চালু হবে ঢাকা-তাসখন্দ ফ্লাইট

ঢাকা: ঢাকায় দূতাবাস চালুর বিষয়ে সম্মত হয়েছে উজেবেকিস্তান। এছাড়া দুই দেশের রাজধানীর মধ্যে ঢাকা-তাসখন্দ রুটে ফ্লাইট চালুর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেও উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে উজবেকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী জামশিদ খোদজায়েভ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের মধ্যে অনুষ্ঠিত সৌজন্য বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহায়তা বিষয়ক তৃতীয় ইন্টার-গভর্নমেন্টাল কমিশন সভায় যোগ দিতে বর্তমানে ঢাকা সফর করছেন উপপ্রধানমন্ত্রী জামশিদ খোদজায়েভ।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন ২০২১ সালে তার উজবেকিস্তান সফরের সময় দেশটির রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করেন এবং ঢাকায় উজবেকিস্তানের একটি কূটনৈতিক মিশন খোলার বিষয়ে উজবেক রাষ্ট্রপতির ইতিবাচক মনোভাবের কথা তুলে ধরেন। তিনি আশ্বাস দেন, ঢাকায় উজবেকিস্তানের কূটনৈতিক মিশন খোলার ব্যাপারে সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে উজবেকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ঢাকায় উজবেকিস্তানের দূতাবাস খোলার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে আগের মতো বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর বিষয়ে জোর দেন। এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনায় কোড শেয়ারিং পদ্ধতির নিয়েও আলোচনা হয়।

ঢাকা-নয়া দিল্লি রুটে বাংলাদেশ বিমানের নিয়মিত ফ্লাইট এবং নয়া দিল্লি-তাসখন্দ রুটে উজবেক এয়ারের নিয়মিত ফ্লাইট দুইটির মধ্যে কোড শেয়ারিং পদ্ধতিতে দুই দেশের জনগণ ভ্রমণ করতে পারবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া পরবর্তী সময়ে চাহিদা বিবেচনা করে ঢাকা-তাসখন্দ সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়েও উভয় পক্ষ সম্মত হয়।

উজবেক উপপ্রধানমন্ত্রী খোদজায়েভ বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে মোঘল আমল থেকে শুরু হওয়া ঐতিহাসিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও ইরানের চাবাহার বন্দরের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হলে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হবে বলে উজবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সাক্ষাতে ড. মোমেন উজবেকিস্তান থেকে তুলা আমদানির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এসময় উজবেক উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উজবেকিস্তান থেকে তুলা আমদানি করে ভ্যালু অ্যাডিশনের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য দেশে রফতানি করতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন উজবেকিস্তান থেকে সার আমদানির ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রায় উজবেকিস্তানও শরিক হতে পারে। এরই মধ্যে আফ্রিকার কিছু দেশে বাংলাদেশি বিনিয়োগে ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ইমাম বোখারির কথা তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইমাম বোখারি বাংলাদেশ বহুল পঠিত এবং বাংলাদেশি নাগরিকদের উজবেকিস্তান ভ্রমণে এবং ব্যবসায়ীদের উজবেকিস্তানে বাণিজ্যের আগ্রহ রয়েছে। এ বিষয়ে সহজে যেন বাংলাদেশি নাগরিকরা ভিসা পেতে পারেন, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে উপপ্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

উপপ্রধানমন্ত্রী খোদজায়েভ এ বিষয়ে বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ই-ভিসার ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি যেকোনো নাগরিক ভ্রমণ কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ই-ভিসা নিয়ে উজবেকিস্তান ভ্রমণ করতে পারবেন।

সারাবাংলা/টিএস/টিআর

উজবেকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী উজবেকিস্তানের দূতাবাস জামশিদ খোদজায়েভ টপ নিউজ ড. এ কে আবদুল মোমেন ঢাকা-তাসখন্দ ফ্লাইট পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাৎ