সপ্তাহজুড়ে ডিএসই বাজার মুলধন হারিয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা: টানা তিন সপ্তাহ ধরে পুঁজিবাজারে ভয়াবহ দরপতন চলছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহেও (২৪ থেকে ২৮ জুলাই) পুঁজিবাজারে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই সূচকের বড় পতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। বড় দরপতনে গত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন হারিয়েছে ১১ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ তিন সপ্তাহের দরপতনে ডিএসই বাজার মূলধন হারিয়েছে ২৬ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

এদিকে গত ১০ জুলাই ইদুল আজহার পর এখন পর্যন্ত পুঁজিবাজারে ১৩ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১ কার্যদিবসেই পতন দিয়ে শেষ হয়েছে। টানা পতনে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯২ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের (১৭ থেকে ২১ জুলাই) শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ৩ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৬ কোটি টাকা। আগের দুই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৫ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে টানা তিন সপ্তাহের পতনে বাজার মূলধন কমেছে ২৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা।

বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম কমেছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ৬৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৭টির এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

গত তিন সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে যথাক্রমে ১৪৬ পয়েন্ট, ১৯৮ পয়েন্ট এবং ৪২ পয়েন্ট ৬৭ শতাংশ। একই সময়ে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গেল সপ্তাহে কমেছে ৫৫.৫৮ পয়েন্ট, আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭৩.০২ পয়েন্ট এবং ১৯. ৯২ পয়েন্ট। অন্যদিকে প্রধান ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি টানা তিন সপ্তাহ পতন হয়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকের। গত তিন সপ্তাহে সূচক কমেছে যথাক্রমে ৩৬.৮৯ পয়েন্ট, ৩২.২৭ পয়েন্ট এবং ১০.৫৪ পয়েন্ট।

এদিকে গত সপ্তাহে ডিএসইতে সবকটি সূচকের পতন হলেও লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৩৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৫৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

অন্যদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ১৬৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ২ হাজার ৭৭০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। লেনদেন বেড়েছে ৩৯৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৯৪ কোটি ১১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ১২ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মতিন স্পিনিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯৫ কোটি ১৫ লাখ ২৮ হাজার টাকা। ৯৪ কোটি ৫৭ লাখ ২২ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেডিএস এক্সসরিজ।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে— ফরচুন সুজ, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, সোনালী পেপার, ওরিয়ন ইনফিউশন, কাট্টালী টেক্সটাইল, স্কয়ার টেক্সটাইল এবং শাহিনপুকুর সিরামিক।

সারাবাংলা/জিএস/আইই

টপ নিউজ