ইয়াবার টাকায় সোনার কারবার, রোহিঙ্গা মা-ছেলে গ্রেফতার
৩০ জুলাই ২০২২ ২০:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর থেকে আটটি সোনার বারসহ মা ও ছেলেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিক মা-ছেলে ইয়াবা ব্যবসার টাকা বিনিয়োগ করেন সোনা চোরাচালান কারবারে। বাংলাদেশি সেজে সলিমপুরে ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে জমি কিনে বাড়ি, মাদরাসা, মসজিদ স্থাপন করেন।
শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মা ছহুরা খাতুন (৬৮) ও ছেলে আজমত উল্লাহকে (২৪) গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে আটটি সোনার বার, সোবার চেইন ৫টি, সোনার বালা ১ জোড়া, কানের দুল ৩ জোড়া, আংটি ৩টি এবং লকেট ৪টি। সোনার বারের প্রতিটির ওজন ১৪ ভরি। সব মিলিয়ে দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ সারাবাংলাকে জানান, ২০১২ সালে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে মোজাহের আহমেদ, তার স্ত্রী ছহুরা ও ছেলে আজমত কক্সবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। দুই বছর কক্সবাজারের ঈদগাঁও এলাকায় অবস্থান করেন। ২০১৪ সালে মোজাহেরের ভাই আব্দুস সালাম আজমতকে বাংলাদেশি হিসেবে পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে সৌদিআরবে নিয়ে যান। ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত তিনি সেখানে ছিলেন। অবৈধ অভিবাসী হিসেবে সেদেশের পুলিশের হাতে ধরা পড়লে তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশে ফিরে আজমত বিয়ে করেন। সেই সূত্রে পুরো পরিবার ২০২০ সালে চলে আসে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে। সেখানে বিস্তির্ণ পাহাড়ি খাসজমি দখল করে রেখেছে কয়েকটি ভূমিদস্যু গ্রুপ। তাদের সঙ্গে আঁতাত করে মোজাহের জমি কেনেন।
‘আজমত বিদেশে চলে যাবার পর মোজাহের কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করেন। মিয়ানমারে থাকতেও তিনি ইয়াবা চোরাচালানে যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশে আসার পরও ইয়াবা চোরাচালান অব্যাহত রাখেন। অবৈধ মাদক ব্যবসা করে প্রচুর টাকা উপার্জন করে মোজাহের সলিমপুরে জমি কিনে ঘর তুলে বসবাস শুরু করেন। নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে করতে সেখানে মসজিদ-মাদরাসা স্থাপন করেন। ইয়াবা ব্যবসার টাকা বিনিয়োগ করেন স্বর্ণের চোরাচালানে।’
র্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ আরও জানান, দুই বছর আগে মোজাহের মারা যান। কিন্তু আজমত তার মায়ের সহযোগিতায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ইয়াবা ও সোনার বার এনে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে পাচার করে আসছিলেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ইয়াবা ও সোনার চালান পৌঁছে যাচ্ছিল দেশের বিভিন্নপ্রান্তে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গোপন সূত্রে তথ্য পেয়েই জঙ্গল সলিমপুরে আজমত উল্লাহর বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস