জনসংখ্যার হিসাব পছন্দ না হলে সন্তান পয়দা করুক: প্রধানমন্ত্রী
১ আগস্ট ২০২২ ১৯:৫৬
ঢাকা: জনশুমারি ও গৃহগণনার মাধ্যমে প্রাপ্ত জনসংখ্যার হিসাব নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের হিসাবটা পছন্দ হয় না কেন? তাহলে নিজেরাই সন্তান পয়দা দিতে থাকুক, জনসংখ্যা বাড়াতে থাকুক। যাদের পছন্দ হয় না, তারা সেটি করুক। আমরা খাবার দেব, কোনো আপত্তি নেই।
সোমবার (১ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু আমরা চাই প্রত্যেকটা পরিবার যেন সুখি পরিবার হয়, সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। প্রতিটি ছেলে-মেয়ে যেন লেখাপড়া শিখতে পারে।’
বর্তমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বলবো—দেশবাসীর কাছে যেতে হবে, তাদের আহ্বান জানাতে হবে। আমাদের খাদ্য আমরা উৎপাদন করব। আমরা কৃষকদের ভর্তুকি দিচ্ছি। কৃষকদের উপকরণ কার্ড আমরা দিয়ে দিয়েছি, তারা ন্যায্য মূল্যে সার কিনতে পারছে। দশ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে তার মাধ্যমে আমরা ভর্তুকি পাঠাই।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কৃষির যান্ত্রিকীকরণের জন্য আমরা ৭০ ভাগ পর্যন্ত তাদের বিশেষ ভর্তুকি দিচ্ছি। শিল্প গড়ে তোলার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। সাক্ষরতার হার আমরা বৃদ্ধি করেছি। দেশের প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যে আমরা একটা চেতনা উদ্বুদ্ধ করেছি।’
‘আজ আমাদের জনসংখ্যা যেমন সাড়ে ১৬ কোটির উপরে, সেটাও কারো কারো পছন্দ হচ্ছে না। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করব যে, তাদের হিসাবটা পছন্দ হয় না কেন-’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর মঙ্গা কবলিত উত্তরবঙ্গে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে লঙ্গরখানাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথাও নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। এই সময় তিনি সেখানে সফর করেন বলেও জানান। ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় তৎকালীন গণমাধ্যমে প্রকাশিত কুড়িগ্রামের চিলমারীর বাসন্তীর ছবি প্রসঙ্গ তুলে ধরে তার বাড়িতে যাওয়ার ঘটনা এবং তাদের করুণ অবস্থার কথা বর্ণনা করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘তখন আমি শুধু বলেছিলাম আমার বাবার রক্ত নিয়েতো বাসন্তীদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। তাহলে কেন হত্যা করা হলো? দেশের মানুষ শোষণ-বঞ্চনার শিকারই থাকল। তাহলে এই মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাদের চোর, ডাকাত বানাল। এত কিছু করল। তাতে দেশের মানুষ কী পেলো? সেটিই বড় প্রশ্ন।’
১৯৮৩ সালে আওয়ামী লীগ প্রথম রক্তদান কর্মসূচি শুরু করলেও তৎকালীন সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তাতে বাধা দেন বলে জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের রক্তঋণে আবদ্ধ করে গেছেন। আমরা রক্ত দিয়ে দেশের একজন মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে পারি সেটিই আমাদের লক্ষ্য।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি। বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ।
সারাবাংলা/একে
আওয়ামী লীগ জনশুমারী জনসংখ্যার হিসাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা