সাংবাদিক কাজলের আপিল ৩১ অক্টোবরের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ
২ আগস্ট ২০২২ ০৯:২০
ঢাকা: সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা তিন মামলার অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে করা আপিল আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। হাইকোর্ট বিভাগকে এ নির্দেশনা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
সোমবার (১ আগস্ট) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে কাজলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।
এর আগে, গত ১ জুন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা তিন মামলার সব কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও আতাউর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ এই আদেশ দেন আপিল বিভাগ।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। সাংবাদিক কাজলের পক্ষে আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া এ আবেদন করেন।
গত বছরের ৮ নভেম্বর ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিক কাজলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। পরবর্তীতে ওই অভিযোগ গঠন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন সাংবাদিক কাজল। ওই আবেদনের শুনানি শেষে তিন মামলার সকল কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালের ৯ মার্চ রাজধানী ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানায় কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাগুরা-১ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ সাইফুজ্জামান শেখর প্রথম মামলা দায়ের করেন। এরপর ১০ ও ১১ মার্চ হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইয়াসমিন আরা ওরফে বেলী এবং সুমাইয়া চৌধুরী বন্যা পৃথকভাবে আরও দু’টি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা ২০২০ সালের ৪ এপ্রিল, ৪ ফেব্রুয়ারি ও ১৪ মার্চ চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার তিনটির অভিযোগপত্র জমা দেন।
মামলায় কাজলের বিরুদ্ধে ফেসবুকে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কে অশালীন, মানহানিকর, আপত্তিকর ও ভুয়া তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়।
সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা দায়েরের পরদিন ২০২০ সালের ১০ মার্চ নিখোঁজ হন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে তুলে নিয়ে যায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। ওই বছর ৩ মে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় উদ্দেশ্যবিহীনভাবে ঘুরতে দেখে আটক করে। একইদিনে তাকে যশোরের একটি আদালত ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে হাজতে পাঠায়। পরবর্তীতে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর প্রায় সাড়ে আট মাস কারাভোগের পর ২০২০ সালের ২৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হন সাংবাদিক কাজল।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও