বর্ণিল আয়োজনে নোভাস্কসিয়ায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন
২৩ এপ্রিল ২০১৮ ১৩:৫১
।। কানাডা থেকে।।
কানাডার নাভাস্কসিয়াতে বর্ণিল আয়োজনে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশান অফ নোভাস্কসিয়া (বিডিক্যান্স) ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বাংলা ১৪২৫ সালকে বরণ করে নিতে কানাডার হালিফাক্স, ডার্ট মাউথ, ট্রু, আন্টিগোনিশ শহরের দুই শ’রও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। আবহমান বাংলার সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ এবং মঞ্চ ঐতিহ্যবাহী নকশা এবং বাংলাদেশি চিত্রকলা দিয়ে সাজানো হয়।
পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সুচনা হয়। এরপর অনেকটা ঢাকার রমনার বর্ষবরণ উৎসবের মতো বাঙালি সাজে আনন্দ মিছিল ও মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে প্রবাসী বঙালিরা। ‘একদিন বাঙালি ছিলাম র’ সুরের তালে তালে শোভাযাত্রা করেন তারা। নানা রঙের সাজসজ্জার মধ্য দিয়ে বাঙালি ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। শোভাযাত্রাগুলোতে অসম্প্রদায়িক বাঙালি চেতনার চিত্র ফুটে ওঠে।
‘যা সুন্দর তা-ই সত্য, যা সত্য তা-ই সুন্দর। মানবিক চেতনার উন্মেষ না ঘটলে জাতির সকল অর্জন ম্লান হয়ে যেতে পারে’- এমন বোধের জাগরণে এবারের বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিল ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। আর তাই যেন নোভাস্কসিয়ার এই বৈশাখী অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরসহ সব বয়েসী প্রবাসীদের মধ্যে ফুঠে উঠে সোনার মানুষ হওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়।
বৈশাখের আগমনী গান ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। এর পর বিডিক্যান্সের উদ্যোগে হ্যালিফ্যাক্স কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে নববর্ষের প্রদর্শনী উপলক্ষে একটি মনোজ্ঞ তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। বর্ষবরণ উপলক্ষে বিডিক্যান্স হ্যালিফ্যাক্স বাংলা স্কুলের পরিবেশনায় ছড়া ‘মামার বাড়ী’ পরিবেশনা বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইতিহাস, ঐতিহ্য, বাঙালি সংস্কৃতি লালনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরেন বিডিক্যান্স এর চেয়ারপারসন আযহারুল হক।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলাদেশি সংস্কৃতি লালনের আগ্রহ সৃষ্টি করা ও বিশ্বের বুকে বাঙালি সংস্কৃতিকে তুলে ধরার প্রত্যয় নিয়ে তারা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ সময় গত এক বছরে বিডিক্যান্স এর সদস্যরা পজিটিভ চিন্তা-চেতনা, ও উৎসাহ-উদ্দীপনা দিয়ে সকল বাধা ও প্রতিবন্ধকতা দূর করে সামনের দিকে এগিয়ে চলার দৃঢ়তার জন্য বিডিক্যান্সের স্বেচ্ছাসেবকদের সনদপত্র ও মেডেল প্রদান করেন তিনি। এক বছর আগেও যা স্বপ্ন ছিল তা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আযহারুল হক।
স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র সহযোগে লোকগীতি, দেশাত্মবোধক গান সূর্যোদয়েও তুমি, গ্রাম ছাড়া ওই রাঙামাটির পথ, সমবেত সংগীত- আমরা সবাই রাজা, নৃত্য ও কবিতা আবৃতি করা হয়। আমিনুল ইসলাম বাপ্পীর ‘অদ্ভুত সেই ছেলেটি, নাগিব এর আমার স্বপ্নগুলো, ড. নাসিমের মেলায় যাইরে সবাইকে বিমোহিত করে।
সবশেষ সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং এক সঙ্গে চলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বাংলাদেশি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশান অফ নোভাস্কসিয়ার পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানের সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/আইএ/এমআই