অনাবৃষ্টিতে ব্যাহত আমন চাষ
২ আগস্ট ২০২২ ১৭:৩৯
রাঙ্গাবালী: চলছে টানা খরা। অনাবৃষ্টি ও দাবদাহ। কাগুজে বর্ষার শেষ দিকে এসেও বৃষ্টির জন্য হাহাকার চারদিকে। শুকিয়ে গেছে ফসলি জমি। আবাদ করা আমনের জমিতে পানি না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসে আমন ধান আবাদ করা হয়। কেননা এই সময়ে বৃষ্টির পানি থাকে। কিন্তু এ বছর একেবারে ভিন্ন চিত্র। অনাবৃষ্টির কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে কৃষি জমিতে। কেউ কেউ পাওয়ার পাম্প দিয়ে পানি সেচ করে বীজতলা তৈরি করছেন। আবার পানি সংকটে কারো কারো রোপা বীজ মরে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও রোদে জমি ফেটে চৌচির।
কৃষকরা বলছেন, আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত আমন ধানের বীজ জমিতে রোপণ করা হয়। তবে, চলতি আমন মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় তারা চাষাবাদ নিয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। মূলত বর্ষাকালে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানিতে কৃষকেরা আমন চাষ করে থাকেন। বীজতলায় তৈরি হওয়া চারা ২৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগানো হয়। তবে অনেক কৃষকের চারার বয়স দেড় মাস পেড়িয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ২৮ হাজার ২৩০ হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি ৮ হেক্টর হাইব্রিড, ৮২৫ হেক্টর উফসি, স্থানীয় জাতের ৪২০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা প্রস্তুত করা হয়েছে।
ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের আমন চাষী বেল্লাল মিয়া বলেন, তিনি ২ একর জমিতে আমন ধান উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় এখনো তিনি চারা রোপণ এবং জমি প্রস্তুত করতে পারেননি। বৃষ্টি না হলে সেচের পানি দিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে। আর বৃষ্টির পানিতে রোপা আমন চাষ ভালো হয়। তবে পরিমান মতো বৃষ্টি না হলে এবার অনেক কৃষক ধান লাগাতেই পারবে না।
মৌডুবি ইউনিয়নের ভুইয়াকান্দা গ্রামের আরেক আমন চাষি নাঈম বলেন, আষাঢ় মাসে শেষে বীজ তোলার উপযুক্ত সময়। কিন্তু শ্রাবণ মাস শেষ হতে চললেও বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন ধানের ক্ষেত এখনো প্রস্তুত করতে পারিনি। এদিকে বীজতলা ও রোপণের জমিগুলো রোদে ফেটে চৌচির।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল আহম্মেদ বলেন, আমনের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু বৃষ্টি না থাকায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। বৃষ্টি না থাকার কারণে অধিকাংশ কৃষকের বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যাদের সামর্থ্য আছে অন্তত সেচের মাধ্যমে হলেও বীজগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা। যদিও সেচের মাধ্যমে আমনের চাষ করা অনেক জটিল। তাছাড়া আমনের চাষ দেরিতে হলে এর প্রভাব গিয়ে তরমুজের চাষে পড়তে পারে।
সারাবাংলা/এএম