ঢাকা: প্রায় তিন দশক আগে ১৯৯৪ সালে আনসার বিদ্রোহের ঘটনায় অভিযোগ থেকে খালাস পাওয়াদের মধ্যে যাদের বয়স ও শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে, তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল প্রশ্নে আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন ফকির, মো. সালাহ উদ্দিন দোলন ও অনীক আর হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং আনসার ভিডিপি মহাপরিচালকের পক্ষে আইনজীবী কামাল উল আলম ও কামরুল হক সিদ্দিকী।
পরে আইনজীবী মো. সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, পর্যবেক্ষণসহ আপিল ও লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ধারণা করছি পর্যবেক্ষণ আনসার সদস্যদের জন্য ইতিবাচক হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
জানা যায়, বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে ১৯৯৪ সালের ৩০ নভেম্বর আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। যা পরে বিদ্রোহে রূপ নেয়। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এ ঘটনার পরে ২ হাজার ৬৯৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে কয়েকজনকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হলেও বাকি ২ হাজার ৪৯৬ আনসারকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
পরে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ৭টি ফৌজদারি মামলাও করা হয়। এর মধ্যে ১৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। অভিযুক্তরা বিচারে খালাস পান। এ অবস্থায় খালাস পাওয়া আনসার সদস্যরা চাকরি ফিরে পেতে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন। কিন্তু তাদের চাকরি পুনর্বহাল করা হয়নি।
এরপর ২০১৮ সালের বিভিন্ন সময়ে ২৩৬৩ জন আনসার সদস্য চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টে তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশনা দিয়ে রায় দেন।
রায়ের বলা হয়, যাদের শারীরিক-মানসিক সক্ষমতা আছে তারাই চাকরি ফেরত পাবেন। কিন্তু যাদের সক্ষমতা নেই তারা যতদিন চাকরিতে ছিলেন তাদের ততদিনের পেনশন সুবিধা দিতে বলা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে এ রায় বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
এরপর আনসার ভিডিপির মহাপরিচালক হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করেন আপিল বিভাগ।