টয়লেটে লাশ: যৌন নিপীড়নে অতীষ্ঠ তরুণ খুন করে দোকানিকে
৬ আগস্ট ২০২২ ১৯:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে টয়লেট থেকে দোকানির লাশ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। দোকানির যৌন নিপীড়নে অতীষ্ঠ হয়ে তার পরিচিত এক তরুণ তাকে খুন করেছে বলে জানিয়েছেন ডিবি কর্মকর্তারা।
গতকাল শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার তেকোটা গ্রাম থেকে ওই তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তরুণ হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে ডিবি। গ্রেফতার মো. আদনান ওরফে জিসানের (২০) বাসা নগরীর হালিশহর থানার সবুজবাগ এলাকায়।
গত ১ আগস্ট নগরীর ডবলমুরিং থানার দাইয়াপাড়া এলাকায় নিজ দোকানের পেছনে টয়লেট থেকে মুদি দোকানি শাহাদাত হোসেন কনকের (৩০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি নোয়াখালী জেলায় হলেও চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের গুলবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
লাশ উদ্ধারের দুইদিন আগে ৩০ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিলেন দোকানি কনক। তার বাবা ছেলের সন্ধান চেয়ে ডবলমুরিং থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) সামীম কবির সারাবাংলাকে বলেন, ‘জিসান স্বীকার করেছেন তিনি ছুরিকাঘাত করে কনককে খুন করে লাশ টয়লেটের ভেতরে ফেলে রাখে। পরে পালিয়ে আনোয়ারা উপজেলার তেকোটা গ্রামে বোনের বাড়িতে চলে যান। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত করে আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি।’
হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, জিসান নিয়মিত কনকের দোকান থেকে কেনাকাটা করতেন। দু’জনের মধ্যে ভালো সখ্যতা ছিল। ঘটনার কয়েকদিন আগে বাসায় কেউ না থাকার সুবাদে জিসানকে নিজের বাসায় নিয়ে যান কনক। রাতে বাসায় ভয়ভীতি দেখিয়ে জিসানকে যৌন নিপীড়ন করে। এরপর আরও কয়েকবার জিসানকে বাসায় নিয়ে একই কাজ করে কনক। গত ২৮ জুলাই দোকানের পেছনে টয়লেটে নিয়ে নিপীড়ন করে। এতে অতীষ্ঠ হয়ে কনককে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন জিসান। টেলিভিশনে ক্রাইম পেট্রোল সিরিয়াল দেখে খুনের ছক কষে বলে জানিয়েছেন তিনি।’
গ্রেফতার তরুণের বরাতে হত্যাকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে গোয়েন্দা কর্মকর্তা সামীম কবির বলেন, ’গত ৩০ জুলাই দোকানে যায় জিসান। গভীর রাতে দোকান বন্ধ করে জিসানকে নিয়ে ওই টয়লেটে যায় কনক। সেখানে আবার নিপীড়নের উদ্যোগ নিলে জিসান তার সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে বুক পেট, হাত ও উরুতে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। হত্যার পর জিসান পাশের একটি ঝোপে ছুরিটি ফেলে দিয়ে কনকের মোবাইল নিয়ে চলে যায়।’
গতকাল শুক্রবার জিসানকে গ্রেফতারের পর তার দেখানো স্থান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
সারাবাংলা/আরডি/এনএস