ঢাকায় সিপিবি’র বিক্ষোভ সমাবেশ
৬ আগস্ট ২০২২ ২০:১৪
ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সরকারের আরেক অপরাধমূলক কাজ এই সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
শনিবার (৬ আগস্ট) বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পল্টন মোড়ে সিপিবি’র সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, কেন্দ্রীয় নেতা অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম এম আকাশ, সাজ্জাদ জহির চন্দন।
প্রতিবাদ সমাবেশে সিপিবি’র সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘এই সরকার অগণতান্ত্রিক এবং জুলুমে দেশ চালাচ্ছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেটের এবং লুটেরাদের সরকার। পার্লামেন্টের ৬২ শতাংশ ব্যবসায়ী সদস্য, তারা নিজ নিজ শ্রেণি স্বার্থে, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে দেশ পরিচালনা করছে। এই সরকার জনগণের পেটে লাথি মারছে। বাজার অর্থনীতির বিপরীতে জনগণের অর্থনীতিতে দেশ পরিচালনা করা না গেলে দেশের অবস্থা আরও শোচনীয় হবে। ব্যবস্থা বদল করে তীব্র গণসংগ্রামের মধ্য দিয়ে জনগণের বিকল্প শক্তি গড়ে না তোলার কোনো বিকল্প নেই।’
প্রতিবাদ সমাবেশে সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘ডিজেল, কেরোসিনসহ জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি সরকারের পক্ষে অপরাধমূলক কাজ। তেলের দাম বাড়লে যাতায়াতসহ সব কিছুর দাম বাড়বে। অর্থনীতিতে চাপ পড়বে। জনজীবন বিপর্যস্ত হবে।’
বিশ্ববাজারে দাম কমানোর পরে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে এই লুটেরাদের সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। জনস্বাথের্র কথা ন্যূনতম বিবেচনা করতে ব্যর্থ এই সরকারের উচিত ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে সিপিবি জেলা-উপজেলায় ঘেরাও, অবরোধ ও প্রয়োজনে হরতালের মতো কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে সিপিবির সহ-সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ বলেন, ‘এই সরকার গ্যাস, তেল , সার, কেরোসিন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করে দেশকে নজিরবিহীন বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে। মধ্যরাতের সরকার মধ্যরাতেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জনগণের জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলছে।’
প্রতিবাদ সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘বাংলাদেশের টাকার এখনও গুরুতর সংকট হয়নি। লুটেরাদের আর পাচারকারীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে দেশ পরিচালনা করুন। আইএমএফ-এর কাছ থেকে ধার করে দেশকে বিপদে ফেলার কোনো নৈতিক অধিকার আপনাদের নেই।’
প্রতিবাদ সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন বলেন, ‘গণবিরোধী সরকার তার গণবিরোধী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এই সিদ্ধান্তে জনগণের ন্যূনতম সমর্থন নেই। গতকাল থেকেই পরিবহনে নৈরাজ্য শুরু হয়ে গেছে। এই গণবিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই গড়ার আহ্বান জানাই।’
আজ ৬ আগস্ট পুরানা পল্টনে প্রতিবাদ সমাবেশ পরবর্তী বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। সিপিবির জাতীয় পরিষদ সভা শেষে দুই দিন ব্যাপী কেন্দ্রীয় কমিটির সভা চলছে। আজকের সমাবেশে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ থেকে জ্বালানি তেল, সারের দাম না কমানো পর্যন্ত সারা দেশে সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখতে ও ঘেরাও-অবরোধ-হরতাল সংগঠিত করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।একই দাবিতে আজ সারা দেশের অন্তত ২৫টি জেলায় সিপিবির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে