আশুগঞ্জ নদীবন্দর স্থাপনে ৫ খাতে বাড়ছে ব্যয়
৮ আগস্ট ২০২২ ০৯:১০
ঢাকা: আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নদীবন্দর স্থাপনে ৫ খাতে বাড়ছে ব্যয়। ফলে মূল প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে ৪৫৮ কোটি টাকা। ফলে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।
যেসব খাতে ব্যয় বাড়ছে সেগুলো হলো- পরামর্শক সেবা, সিডিউল দর পরিবর্তনে ব্যয় বৃদ্ধি, বন্দরের অবকাঠামোগত সুবিধা এবং জেটি সুপারস্ট্রাকচার, পাইলিং, জেটি ফিটিং, কার্গো টার্মিনাল অবকাঠামো ও অন্যান্য অঙ্গেও ব্যয় বৃদ্ধি এবং কার্গো হ্যান্ডলিঙ ইক্যুইপমেন্টের ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সাবেক সদস্য ও বর্তমান পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ব্যয় বৃদ্ধির বেশ কিছু যৌক্তিক কারণ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা তুলে ধরেছেন। গত ১২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভায় বিস্তারিত বিচার বিশ্লেষণ করা হয়। এরপর সংশোধনী প্রস্তাবটি একনেকে উপস্থাপনের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম, মোংলা ও অন্যান্য পোর্ট হতে কন্টেইনারগুলো অভ্যন্তরীণ নৌ-পথ ব্যবহার করে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং প্রতিবেশি দেশে পরিবহণ করা সম্ভব হবে। নদী পথে কন্টেইনার পরিবহন সহজ হবে। এর ফলে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্যিক সুবিধাদি সৃষ্টি হবে যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন আশুগঞ্জ দেশের একটি ঐতিহ্যবাহী অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নদীবন্দর। এ বন্দর প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক জাহাজ আসে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কার্গো ও প্যাসেঞ্জার লোড, আনলোড হয়ে থাকে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট ও ট্রেড প্রট্রোকল চুক্তির অধীনে আশুগঞ্জকে পোর্ট অব কল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নদী পথের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ব্যবস্য বাণিজ্য বৃদ্ধি ও উপ-আঞ্চলিক ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর জন্য ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়।
বর্তমানে কিছু অঙ্গ সংযোজন, বিদ্যমান কিছু অঙ্গের খাত পরিবর্তন ও ব্যয় হ্রাস বৃদ্ধির কারণে ১ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়। প্রস্তাবিত আরডিপিপির উপর চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভার সিদ্ধান্তগুলো পুনর্গঠিত আরডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। পুনর্গঠিত প্রকল্প ব্যয় ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা এবং বাস্তবায়নকাল ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের মেয়াদকাল এবং পরামর্শক সেবাঃ প্রকল্পটি মূলত ২০১৮ সালের জুলাই হতে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়েছিল। পরবর্তীতে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পটির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত ড্রইং ডিজাইন অনুযায়ী মাস্টার প্ল্যান ও প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তুত করা হয়েছে। সে জন্য আরডিপিপি প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দরপত্র আহ্বানের ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পাদনের জন্য দরপত্র প্রস্তুত করা হবে। তবে পরামর্শক সেবা থেকে প্রাপ্ত চূড়ান্ত বিস্তারিত ডিজাইনের নকশা মোতাবেক এটার নির্মাণকাল কমপক্ষে ৩ বছর প্রয়োজন হবে। এ কারণে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ৩ বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেজে/এএম