Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চাওয়া পাওয়া বিলাসিতাই জীবন না: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৮ আগস্ট ২০২২ ১৪:৩৭

ঢাকা: নারী সমাজকে বঙ্গমাতার জীবন আদর্শ ধারণ করে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু চাওয়া-পাওয়া বিলাসিতা, এটাই জীবন না। একটা মানুষের জীবনে মানুষের কল্যাণে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আদর্শ নিয়ে চললে মানুষের জন্য অনেক অবদান রাখা যেতে পারে। তাই দেশের নারী সমাজকে বলব, ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে মানুষের কল্যাণে সবাই কাজ করবেন।

সোমবার (৮আগস্ট) সকালে ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন’ এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক-২০২২ প্রদান’ অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন প্রান্ত থেকে আয়োজিত ভার্চুয়ালি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানটি গোলাপগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত থেকে অসহায় দুঃস্থ মহিলাদের স্বাবলম্বী করার জন্য সেলাই মিশন বিতরণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এই সেলাই মেশিন বিতরণ করে জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা।

বিজ্ঞাপন

এ বছর রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সমাজসেবা এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ যে পাঁচ বিশিষ্ট নারী ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক-২০২২ প্রদান করা হয়। পদকপ্রাপ্তরা হলেন, ‘রাজনীতির ক্ষেত্রে সিলেট জেলার সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, অর্থনীতিতে কুমিল্লা জেলার সেলিমা আহমাদ এমপি, শিক্ষা ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ, সমাজসেবা ক্ষেত্রে কিশোরগঞ্জ জেলার মোছা. আছিয়া আলম এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আশালতা বৈদ্য (যুদ্ধকালীন কমান্ডার)।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, বঙ্গমাতার অবদানকে চিরস্মরণীয় করার লক্ষ্যে প্রতিবছর আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ক’ শ্রেণিভূক্ত সর্বোচ্চ জাতীয় পদক ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ প্রদান করা হয়ে থাকে।

বড় মেয়ে হিসাবে বঙ্গমাতার জীবনের নানাদিক তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, তিনি (বেগম ফজিলাতুন্নেছা) কখনো সাংসারিক ব্যাপারে আমার আব্বাকে কিছু চিন্তাই করতে দেননি। অর্থাৎ যেহেতু আব্বা রাজনীতি করেন এবং রাজনীতির কাজটা তিনি জানতেন। আব্বা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। সেটা উপলব্ধি করেই তিনি সবসময় পাশে থেকে প্রেরণা দিয়ে গেছেন। কখনো একজন স্ত্রী হিসাবে কোনো দাবি তিনি করেননি। বরং আমার বাবার যা কিছু প্রয়োজন ছিল, সেটা তিনিই দেখতেন। আমার আব্বা হয়ত জানতেনও না।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন সময়ে বঙ্গমাতার সঙ্গে ধানমন্ডির একটি বাসায় বন্দি থাকার সঙ্গী ছিলেন তার বড় মেয়ে শেখ হাসিনা। সেদিন কাছ থেকে দেখা শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরে আমার বাবাকে গ্রেফতার করা হলো, আমার মাকেও গ্রেফতার করা হলো। সেখানেও কিন্তু তিনি ভেঙে পড়েননি। তখনো তার আত্মবিশ্বাস ছিল, এদেশ স্বাধীন হবেই। তিনি এই বিশ্বাসটা নিয়েই সবসময় ছিলেন এবং তার এই বিশ্বাসের জোরটাই বোধহয় আমার বাবার জন্য অনেক সহায়ক ছিল।

‘আমার আব্বার খুব সৌভাগ্য ছিল যে, আমার মায়ের মতো একজন জীবনসাথী পেয়েছিলেন। সেই সাথে আমার দাদা-দাদীর কথাও বলব। বাবা-মা তার সংসারের বড় ছেলেকে লেখাপড়া শিখাচ্ছে সেই যুগে, অজো পাড়াগাঁ টুঙ্গিপাড়া থেকে। তাকে কোলকাতার হোস্টেলে রেখে পড়াচ্ছেন। তারপর তাদের আকাঙ্ক্ষা থাকে বড় ছেলে টাকা পয়সা কামাই করে বাবা-মাকে দেবে। উল্টো আবার আব্বাকে আমার দাদা-দাদীও যেমন দিয়েছেন, আমার মা’ও তার টাকা পয়সা তাকেই দিতেন। আমার আব্বা এ রকম একজন জীবনসাথী, বাবা-মা পেয়েছেন বলেই; আমাদের সংগ্রামে সাফল্য অর্জন করা, দেশের স্বাধীনতা অর্জন করা সহজ হয়েছিল।’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং বঙ্গমাতার জন্য দোয়া কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ১৫ আগস্টে তিনি নিজের জীবন ভিক্ষা চাননি। নিজের জীবনটাও দিয়ে গেছেন। সবাই দোয়া করবেন আমার মায়ের জন্য, সেটাই আমি চাই।

মহিলা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল প্রত্যেক জেলায় জেলায় নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আমাদের বহু কর্মজীবী মহিলা আছে। তারা যেন সঠিকভাবে থাকতে পারে, সেই ব্যবস্থাটা নিতে হবে।

সারাবাংলা/এনআর/এএম

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর