Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারের পদত্যাগ চায় মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ আগস্ট ২০২২ ২০:০৬

ঢাকা: ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেন এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে। তবে দলটির চেয়ারম্যান জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম কাদের সরকারকে জমিদারি স্বৈরাচার সরকার আখ্যায়িত করে সরকারকে পরিবর্তনের জন্য জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়েছে।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, রাষ্ট্রকে শ্রীলংকার মতো পরিণতির দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। জনগণের ওপর জুলুম অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বীমা ধ্বংস করে দিয়েছে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের রাজনীতি শেষ করে দেবে। দেশে গণতন্ত্রের পরিবর্তে জমিদারি কায়দায় ইচ্ছাতন্ত্র চালু করবে।’

সোমবার (৮ আগস্ট) কাকরাইল জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

জি এম কাদের দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘তেলের দাম যখন বিশ্ব বাজারে নিম্নমুখী তখন সরকার রাতের অন্ধকারে তেলের দাম বাড়িয়েছে। এতে করে দেশের প্রতিটি সেক্টরে প্রভাব পড়েছে। আইএমএফ এর পরামর্শে সরকার জনবিরোধী পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারের কাছে আমার প্রশ্ন আইএমএফ এদেশের মানুষকে জবাই করতে বললে আপনারা কি তাই করবেন?’

বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদে একাধিকবার আপনারা বলেছেন বিদ্যুৎ মজুদ আছে এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকেরও রিজার্ভ রয়েছে। শ্রীলংকায় ঋণ দিয়েছেন। ব্যাংকের রিজার্ভের কমতি নেই। এই কয়েকদিন আগে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন অনেক টাকা রিজার্ভ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রশ্ন বিদ্যুৎ এবং রিজার্ভ টাকা গেল কোথায়? কড়ায় গণ্ডায় হিসেবে দিতে হবে।’

গোলাম কাদের বলেন, ‘দেশ কিন্তু শ্রীলংকার দিকে যাচ্ছে এ আশঙ্কা অনেক আগেই করেছি। কারণ শ্রীলংকার ওই সরকারের সঙ্গে বর্তমান সরকারের মিল রয়েছে। ওখানে স্বৈরশাসক ছিল আর তারা মেগা প্রজেক্ট করেছে ওখানের সরকারের জবাবদিহিতা ছিল না। ঠিক আমাদের দেশেও সরকারের জবাবদিহিতা নেই, মেগা প্রজেক্ট অনেক রয়েছে। এই মেগা প্রজেক্টগুলো চুরি করার জন্য নেওয়া হয়ে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সরকার জনগণের সরকার। সেখানে স্বৈরশাসক নেই। ভারতের সরকারের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া যায়। আমাদের সরকারের কাছে জবাবদিহিতা চাওয়া যায় না। আমাদের সরকার হলো রাজা। এক সময় জমিদারি প্রথা ছিল সেই জমিদারি প্রথা রাজা। এ জন্যই এই সরকার সকল রাজনৈতিক দল ধ্বংস করার চেষ্টা করছে সরকার চাচ্ছে তার খেয়াল খুশি মতো রাজনীতি করবে দেশ পরিচালনা করবে।’

গোলাম কাদের ব্যাংকের ঋণ ক্লাবের তালিকা যে বলেন, ‘এই প্রস্তুতির চলতে থাকলে দেশে দুর্ভিক্ষ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সরকার পরিবর্তন করতে হবে জনপ্রতিনিধিত্ব তা পরিবর্তন করতে হবে। আমরা চাই বাক স্বাধীনতা নিরপেক্ষ সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন জবাব দিতে সরকার চায় আমরা আমাদের দেশ শ্রীলংকার মত হোক তা চাই না।’

দলটির কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলে, ‘অবিলম্বে তেল- গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম না কমালে জনগণ আপনাদেরকে ক্ষমতায় থাকতে দেবে না।’

দলটির মহাসচিব মুজিবুল্লাহর জন্য বলেন, ‘দেশের সম্পদ লুটপাট করে যা বিদেশে পাঠিয়েছেন এর কড়ায় গণ্ডায় হিসাব নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করেছিলাম। আমরা আশা করিনি সরকার এত দুর্নীতিবাজ হবে, তারা এত দুর্নীতি করবে। সরকার তো দেখছি দেশের কোষাগার খালি করে ফেলবে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিদ্যুতের জন্য জনগণকে গুলি করে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এরা একই মুদ্রার এপিট ওপিট। জনগণ এই দুই দলের প্রতি আস্থা রাখতে পারে না।’

মুজিবুল হক চুন্নু নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলে আপনারা নিশ্চিত থাকেন জাতীয় পার্টি আর কাউকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি করে দেবে না।

কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি দেখে মনে হয় যে সে কোনো সরকার নেই। আমরা এবং অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারকে গৃহবন্দী করে রেখেছে।’

সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ‘তেল গ্যাস বিদ্যুতের দাম কমাতে হবে না হয় জাতীয় পার্টি হাতে চুরি পরে ঘরে বসে থাকবে না।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য সালমা ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় পার্টি মাঠে নেমেছে। পেছনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা বলেন, ‘জনগণ রাস্তায় নেমেছে। সরকার পালানোর পথ পাবে না।’

ফখরুল ইসলাম এমপি বলেন, ‘এ দেশ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছে সরকার।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য মেয়ের আব্দুস সবুর আসুদ বলেন, ‘গভীর অন্ধকারে ছেয়ে গেছে দেশ। গুম-হত্যা-রাহাজানি চাঁদাবাজিতে ভরে গেছে। দেশ এবং গণতন্ত্র ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির বলেন, ‘এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে হেঁচড়ে বিদায় করতে হবে।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল আলম রুবেল বলেন, ‘সরকার মেগা প্রকল্পের নামে মেঘা দুর্নীতি করছে জাতীয় পার্টি এই দুর্নীতি মেনে নিতে পারে না। জাতীয় পার্টি জনগণের দল, জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করে।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টি জাপা টপ নিউজ সরকারের পতন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর