‘আগস্ট ট্র্যাজেডির সবচেয়ে বড় ট্র্যাজিক কুইন বঙ্গমাতা’
৮ আগস্ট ২০২২ ২৩:০১
ঢাকা: যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আগস্ট ট্র্যাজেডির সবচেয়ে বড় ট্র্যাজিক কুইন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তার মতো ভুক্তভোগী মানুষ খুব কম আছে। মাত্র চার বছর বয়সে বাবা-মা হারিয়ে তিনি অনাথ হয়েছেন। অর্থাৎ জীবনের শুরুতেই সবচেয়ে বড় হোঁচট। আমার মতো যারা শিশু বয়সে বাবা-মা হারিয়েছেন, তারাই বুঝবেন একজন এতিমের কষ্ট।
সোমবার (৮ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এদিন বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এমপি। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ’র উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
এ সময় যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘অতি সাধারণ জীবন যাপন ছিল বেগম মুজিবের। তার কোনো জৌলুশ ছিল না, ছিল না কোনো চাকচিক্য। অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি দুইবার মন্ত্রীর স্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী, প্রেসিডেন্টের স্ত্রী। কিন্তু তারপরেও তার চালচলনে ছিল-শাশ্বত বাঙালি মধ্যবিত্ত নারীর আটপৌঢ়ে রূপ। ছিল না কোনো লোভ-লালসা বা সখ-আহ্লাদ। জীবনে কোনো কিছু আবদার করেন নাই স্বামীর বা শ্বশুরের কাছে। প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে যে মানবিক ও চারিত্রিক গুণাবলী দেখে আমরা বিমোহিত হই, তার প্রত্যেকটা শেখ হাসিনা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন তার মা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কাছ থেকে। স্বাধীনতাত্তোর বীরঙ্গনাদের পুনর্বাসনে তিনি বিশেষ অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন এবং সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।’
ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রে তিনি বঙ্গবন্ধুকে সহযোগিতা করেছেন, একাগ্রচিত্তে এবং নিঃশর্তভাবে। জাতির পিতার জীবন সঙ্গিনী হিসাবে তিনি ছিলেন অসাধারণ। এভাবে তিনি নিপীড়িত বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে নেপথ্যে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে। আমদের মুক্তির সংগ্রামে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে আন্দোলন-সংগ্রাম সংগঠিত করেছেন। সংকট মুহূর্তে ধৈর্য ধরে, মাথা ঠাণ্ডা রেখে তিনি সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্তগুলো নিতে পেরেছেন।’
তিনি জানান, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি’র রাজনৈতিক এবং লেখক হিসেবে গড়ে ওঠার পেছনেও প্রেরণার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন বঙ্গমাতা। পড়াশোনার প্রতি ছিল তার অদম্য আগ্রহ। শেখ মণি’র লেখক এবং সাংবাদিক হওয়ার পিছনেও বেগম মুজিবের অবদান অপরিসীম। সুতরাং বেগম মুজিবের চারিত্রিক গুণাবলী বর্তমান প্রজন্মের অনেক কিছু শিক্ষণীয়। বিশেষ করে মানবিকতা এবং রাজনৈতিক ক্ষেত্রে তিনি যে উদাহরণ রেখে গেছেন তা সত্যি অনুকরণীয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং কোনো পিছুটান তাকে ধরতে না পারার পেছনে যিনি নিজেকে তিল তিল করে উৎসর্গ করেছেন তার নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে দেখা যায়, একজন বালিকাবধূ কীভাবে বঙ্গবন্ধুর প্রেরণাদায়িত্রী এবং শুধু সুখ-দুঃখের নয়, মরণেও সহযাত্রী হয়েছেন। বঙ্গমাতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আজীবন সহযাত্রী। ’৭৫-এর ১৫ আগস্টে নিজের জীবন দিয়েই তা প্রমাণ করেছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব।’
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ‘আজ ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা বেগম মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী। কিন্তু আমরা প্রাণোচ্ছ্বল পরিবেশে পালন করতে পারছি না। এজন্য আমাদের কষ্ট হয়। কারণ ১৫ আগস্ট আমাদের সব আনন্দ বিলীন হয়ে গেছে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. হাবিবুর রহমান পবন, এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মো. আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দফতর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিক, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. ফরিদ রায়হান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মীর মো. মহিউদ্দিন, জনশক্তি ও কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক শাহীন মালুম, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আবদুল হাই, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুল মুকিত চৌধুরী, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বী স্মরণ, উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মো. আবদুর রহমান, উপ-পরিবেশ সম্পাদক সামছুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।
সারাবাংলা/পিটিএম
জন্মদিন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব যুবলীগ শেখ ফজলে শামস পরশ