৫৩ কর্মী পাঠানোর মধ্য দিয়ে খুললো মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার
৯ আগস্ট ২০২২ ১৫:৪৫
ঢাকা: নানা দরবার আর চেষ্টার পর খুললো মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) ৫৩ জন বাংলাদেশী কর্মী পাঠিয়ে এই যাত্রার শুভ সূচনা করলো প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
মালয়েশিয়ার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২২ মিনিটে বাংলাদেশ থেকে ৫৩ জন কর্মী নিয়ে এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইট কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে ইমিগ্রেশন শেষ করার পর হাই কমিশনের শ্রম উইংয়ের মিনিস্টার নাজমুস সাদাত সেলিমসহ মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার বিমানবন্দরে তাদেরকে স্বাগত জানান।
কুয়ালালামপুর হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার জিমাত জায়া নামক একটি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশ থেকে পৌঁছানো কর্মীরা কাজ করবেন।
মালয়েশিয়ার সরকারের নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী তারা প্রতিমাসে অন্তত পক্ষে ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত অর্থাৎ বাংলাদেশি প্রায় ৩৭ হাজার টাকা বেতন পাবেন। এছাড়াও তারা মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওভার টাইম, বিনামূল্যে বাসস্থান, স্বাস্থ্যবিমা, কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত বিমাসহ অন্যান্য সব সুবিধা পাবেন।
দীর্ঘ ৪ বছর পর নতুন করে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে যাওয়ায় সেখানে নিযুক্ত হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী তিন বছরের মধ্যে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের ৫ লাখের বেশি নতুন কর্মীর কর্মসংস্থান হবে এবং এর মাধ্যমে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশে পাঠানো মোট রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।’
এর আগে, সোমবার (৮ আগস্ট) রাত ১১ টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এ কে ৭০ ফ্লাইটে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে ওই ৫৩ কর্মী যাত্রা শুরু করেন।
বাংলাদেশ যেসব দেশে জনশক্তি রফতানি করে তারমধ্যে অন্যতম বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। জনশক্তি রফতানিকারকদের অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল মালয়েশিয়া সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সিদ্ধান্ত হয় জিটুজি পদ্ধতিতে কর্মী নিয়োগের। সে পদ্ধতি ব্যর্থ হওয়ায় বছর দুয়েক পর সিদ্ধান্ত হয় জিটুজি প্লাস অর্থাৎ তখন বেসরকারি খাতকে সম্পৃক্ত করা হয়। সে উদ্যোগে আড়াই লাখের বেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পারে। সেখানে সিন্ডিকেটের কারনে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দেয়। এরপর নানা দেনদরবার বৈঠক, চিঠি চালাচালির পর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর সমঝোতা স্বারকে চুক্তি হয়। এক মাসের মধ্যে কর্মী পাঠানোর কথা থাকলেও সিন্ডিকেট জটিলতা সামনে আসায় সে উদ্যোগ আবার পিছিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সম্প্রতি রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স সিমপ্লেক্স ইন্টারন্যাশনালের নামে ৩২৫ কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেয় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত ১৯ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মোট ৩ হাজার ২২ জন কর্মী নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
সারাবাংলা/জেআর/এমও