আশা-উদ্বেগের দোলাচলে বেসিস সফট এক্সপো
১০ আগস্ট ২০২২ ২০:০১
ঢাকা: দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) উদ্যোগে আগামী নভেম্বরে শুরু হচ্ছে ১৭তম বেসিস সফটএক্সপো-২০২২। প্রথমবারের মতো এই এক্সপো রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার জন্য স্থায়ীভাবে নির্মিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) অনুষ্ঠিত হবে।
তবে রাজধানীর বাইরে বেসিস সফট-এক্সপো আয়োজনের উদ্যোগ নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। বেসিস সদস্যরা বলছেন, মেলায় অংশ নিতে তাদের বেগ পোহাতে হবে। মেলায় কোনো একদিন অংশ নিতে চাইলে সেদিনের পুরো কর্মঘণ্টাই তাদের নষ্ট হবে। শুধু তাই নয়, দেশি-বিদেশি ক্রেতাদের অংশগ্রহণও আশানুরূপ পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বেসিস সদস্যরা। তবে বেসিসের আয়োজক কমিটি বলছে, বড় পরিসরে হওয়ায় পূর্বের চেয়ে বেশি সফল হবে এবারের এক্সপো।
পূর্বাচলে সফট এক্সপো আয়োজনের উদ্যোগের বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে বেসিসের সদস্য জেড এস সলিউশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দা খাদিজা দীনা সারাবাংলাকে বলেন, ‘বেসিস সফটএক্সপো সব সময় ঢাকা শহরেই হয়ে থাকে। পূর্বাচলে মেলা হলে সেখানে ক্রেতাদের অংশগ্রহণ নিয়ে যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। বেসিসের সদস্যরাও সেখানে অংশ নিতে আগ্রহ হারাবে। সফটএক্সপোটি অবশ্যই ঢাকার ভেতরে হওয়া উচিৎ। যেহেতু পূর্বাচলে হবে, সেহেতু ক্রেতাদের কাছ থেকে আমরা কতটুকু রেসপন্স পাব- সেটা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসিসের এক সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের (ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরা-আইসিসিবি) এক্সপোতেই অনেকে যেতে চান না। সেখানে পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী কাঠামোতে মেলা আয়োজন করা ঠিক হয়নি। মানুষ এত দূরে যাবে না। আর আইটি ও সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক কিংবা কর্মচারীদের এত দূরের মেলায় অংশ নেওয়া অনেকটাই কষ্টসাধ্য হবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেসিসের আরেক সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক্সপো শহরের মধ্যে হলে ভালো। যখন চীন মৈত্রী (বঙ্গবন্ধু অন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র-বিআইসিসি) থেকে বসুন্ধরা কনভেনশনে এক্সপো নেওয়া হয়, তখনও অনেকেই আপত্তি তুলেছিল। কিন্তু বসুন্ধরা কনভেনশনে ভালোই রেসপন্স পাওয়া গেছে। এখন যেহেতু সেখান থেকেও আরও একটু দূরে নেওয়া হচ্ছে, হয়তো সাময়িকভাবে কিছুটা অসুবিধা হবে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবার নতুন জায়গায় বড় পরিসরে এক্সপো হচ্ছে। পূর্বাচলের রাস্তার কাজও প্রায় শেষ দিকে। আগে তো এক্সপো বসুন্ধরা কনভেনশনে হতো। সেখান থেকে আরও ২০ মিনিট লাগবে। আমাদের লজিস্টিক সাপোর্ট থাকবে, শাটল বাস সার্ভিস থাকবে। আমরা ফিজিক্যালি দেখে এসেছি। সবার ফিডব্যাক পজিটিভ। আন্তর্জাতিক মেলা করার মতোই সেটি একটি ভেন্যু। এতদিন যেসব জায়গায় মেলা করেছি সেগুলো জোর করে নেওয়া। আর নভেম্বর আসতে আসতে রাস্তা আরও ভালো হয়ে যাবে। সব মিলিয়ে নতুন জায়গায় মেলা আয়োজনের বিষয়টি খুবই ইতিবাচক আর সম্ভাবনারও।’
এ প্রসঙ্গে বেসিসের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মেলার আহ্বায়ক সামিরা জুবেরী হিমিকা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ১৭তম বেসিস সফট এক্সপোর ভেন্যু ও তারিখ প্রকাশ করেছি। ২২ থেকে ২৬ নভেম্বর এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩ মাস ধরেই বেসিসের সদস্যরা বুকিং দিতে থাকবে। আমরাও বিভিন্ন পোগ্রাম শিডিউল, সভা সেমিনার, গেস্ট- সবার সঙ্গে কথা বলতে থাকব।’
সারাবাংলার এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা মেলা করার সময় ভাবি জায়গাটি যদি আরেকটু বড় হতো। তাহলে আরও বেশি সভা-সেমিনার করা যেতো। পূর্বাচলে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী কাঠামোটি সেই অর্থে অনেক বড়। ওখানে যদি আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট দিতে পারি, তাহলে আমাদের জন্যে এটি হবে একটি চমৎকার ভেন্যু। ফলে ঢাকার বাইরে হওয়ায় তেমন কোনো সমস্যা হবে না বলে আমরা মনে করছি। বরং আমাদের সদস্যরা তাদের পণ্য বা সেবা আরও বেশি করে প্রদর্শন করতে পারবে। আন্তর্জাতিক ক্রেতারাও ভালো পরিবেশে দেশের তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের সেবা এবং পণ্যের ধারণা নিতে পারবে।’
এদিকে, বেসিস জানিয়েছে, আগে এক্সেপো হতে সাধারণত তিন দিনের। এবার এই এক্সপোর সময়কাল পাঁচ দিন। তবে যেহেতু নতুন জায়গা পূর্বাচলে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে স্টলগুলো প্রস্তুত করতেই অন্তত দুই দিন লেগে যাবে। ফলে এবার এই এক্সপোর সময়কাল পাঁচ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম
পূর্বাচল বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার বেসিস সফট এক্সপো