ধর্ষণে সন্তান জন্মের মামলায় ধর্ষকের যাবজ্জীবন
১১ আগস্ট ২০২২ ১৫:৪৩
ঢাকা: রাজধানীর সবুজবাগ থানা এলাকায় ১১ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের পর সন্তান জন্ম নেওয়ার মামলায় ধর্ষক আসামি মো. রাজু আহমেদের (৩৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) ঢাকার তিন নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। একইসঙ্গে দণ্ডিতের ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং যা অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে ট্রাইব্যুনালের আদেশ ধর্ষণ থেকে জন্ম নেওয়া সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা মাধ্যমে দণ্ডিত ধর্ষকই পিতা প্রমাণিত হয়। তাই পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় রায়ে ট্রাইব্যুনাল ওই সন্তানকে ২১ বছর পর্যন্ত সরকারি শিশু সোনামনি নিবাসে লেখাপড়াসহ রাষ্ট্র সমস্ত প্রকার খরচ বহন করবে মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউর মাহমুদা আক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। জন্ম নেওয়া শিশুটি এখন সরকারি শিশু সোনামনি নিবাসে আছে। রায় অনুযায়ী ২১ বছর পর্যন্ত সরকারি খরচে সেখানে থাকবে। তার আগে পারিবারিক আদালতে আবেদনের মাধ্যমে কোনো পক্ষ নিতে চাইলে নিতে পারবে। আর এর মধ্যে না নিলে ২১ বছর পর হওয়ার পর কোনো পক্ষকে নিতে হবে।
অভিযোগে বলা হয়, ঘটনাকালীন সময় ভুক্তভোগী ইস্টার্ন কলেজের বনশ্রী শাখায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। তার মা একজন শিক্ষিকা। বাসায় মায়ের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ২০১৭ সালের ১২ মে থেকে প্রায় সময়ই বাসায় এসে ভুক্তভোগীকে ফুসলিয়ে ও বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করত।
পরে ভুক্তভোগীর মা ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মেয়ের শারীরিক গঠন দেখে সন্দেহ হলে ইসলামী হাসপাতালে নিয়া গেলে ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানায় তার মেয়ে ৮ মাসের গর্ভবতী। পরে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে ওই মেয়ে জানায়, ওই আসামি প্রায়ই বাসায় এসে তাকে ধর্ষণ করেছে। ওই ঘটনায় ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীর মা মামলা করেন। ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার পর ভুক্তভোগী একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে।
একই বছর ৭ মে মামলাটি তদন্তের পর আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচারকালে ট্রাইব্যুনাল ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন।
সারাবাংলা/এআই/এনএস