ঢাকা: সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি হওয়ায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডলারের দাম, বিপরীতে কমছে টাকার মান। ডলার সংকটের কারণে বর্তমানে খোলাবাজার বা কার্ব মাকের্টে প্রতি ডলার কিনতে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। তারপরেও ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় বিদেশযাত্রায় ক্যাশ ডলার বহনে নিরুৎসাহিত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দেশে যে পরিমাণ ডলার আসছে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ডলার দেশ থেকে বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডলারের আউটফ্লো (বহির্গমন) বেড়ে গেছে। এতে করে ডলারের রিজার্ভ কমছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশে যাওয়ার সময় ক্যাশ ডলার বহনে নিরুৎসাহিত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ডলারের কারসাজি ধরতে খোলাবাজার, মানি এক্সচেঞ্জ হাউজ ও বিভিন্ন ব্যাংকে ধারাবাহিক অভিযান চলছে। অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে বেশকয়েকটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে যে পরিমাণ ডলার আসছে তার চেয়ে বেশি ডলার চলে যাচ্ছে। তাই বিদেশে যাওয়ার সময় ক্যাশ ডলার বহনে নিরুৎসাহিত করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণ থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রেই ডলারের আউট-ফ্লো বেড়ে গেছে। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে বর্তমানে ডলার সে পরিমাণ দেশে আসছে না।’ এ কারণেই খোলা বাজারে ডলারের দাম বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণে বাজারে ডলার সংকট হয়েছে। রিজার্ভও কমেছে। রফতানির তুলনায় বাংলাদেশের আমদানি বেশি। তাই আমদানি-রফতানির মধ্যে শূন্যস্থান পূরণ করতে হলে রফতানি বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই। বাজার স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত রিজার্ভ থেকে ডলার সরবরাহ করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এটা অব্যাহত থাকবে। তবে আমাদের রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে।’
উল্লেখ্য, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করায় গত ৮ আগস্ট দেশি-বিদেশি ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করতে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের কারসাজি রোধে খোলা বাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করছে। এর ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে কারসাজির অভিযোগে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪২টিকে শোকজ করা হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় নয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।