ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত ইউরোপের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চারপাশে সব ধরনের সামরিক কার্যকলাপ অবিলম্বে বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। সম্প্রতি বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাশে গোলাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনার জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন একে অপরকে দায়ী করছে। এ পরিস্থিতিতে দেশ দু’টির প্রতি এই আহ্বান জানালো সংস্থাটি। খবর আলজাজিরা।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক জ্বালানি বিষয় প্রতিষ্ঠান এনারগোঅটম এজেন্সি জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) জাপোরিঝিয়া কমপ্লেক্সে পাঁচবার হামলা করা হয়েছিল। সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পদার্থ সংরক্ষণ করা হয়। ঠিক তার কাছাকাছিই এই হামলা করা হয়েছে।
এদিকে দেশটিতে নিযুক্ত রুশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, ‘ওই প্ল্যান্টে দুইবার গোলাবর্ষণ করেছে ইউক্রেন। ঘটনা ভিন্ন দিকে নেওয়া জন্য এমন করা হচ্ছে।’
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কোনো ক্ষয়ক্ষতি এই অঞ্চলে এবং এর বাইরেও বিপর্যয়কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। রাশিয়ার ডাকা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের আগে এই বিবৃতি দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘ওই এলাকাটি কোনো সামরিক অভিযানের অংশ হিসাবে ব্যবহার করা উচিত নয়। এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রযুক্তিগত পর্যায়ে ও নিরস্ত্রীকরণের সীমানা নির্ধারণে জরুরি চুক্তির প্রয়োজন।’
জাতিসংঘের পরমাণু প্রধান রাফায়েল গ্রসি নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, জাপোরিঝিয়াকে ঘিরে সামরিক কার্যকলাপ খুবই উদ্বেগজনক। ইউক্রেন এবং রাশিয়াকে অবিলম্বে পারমাণবিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা ক্ষতির মূল্যায়ন করার পাশাপাশি কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা বিধানের জন্য অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান। কারণ পরিস্থিতি খুব দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক গ্রোসি গত শুক্রবার জাপোরিঝিয়াতে গোলাবর্ষণ এবং বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা উল্লেখ করে বলেছেন, এতে ওই কেন্দ্রর বৈদ্যুতের ট্রান্সফরমার এবং দুটি ব্যাকআপ ট্রান্সফরমার বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল। এ কারণে একটি পারমাণবিক চুল্লি বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগেই, জাপোরিঝিয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন রাফায়েল গ্রসি। যা গত ২৪ ফ্রেরুয়ারি হামলা শুরু করার পর মার্চে দখলে নেয় রুশ বাহিনী। প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।