ঠাকুরগাঁওয়ে নিপীড়নের প্রতিবাদ করায় ৩ শিক্ষক চাকরিচ্যুত
১৫ আগস্ট ২০২২ ১৪:৩৭
ঠাকুরগাঁও: জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় আরএইচ মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করায় কর্তৃপক্ষ ৩ শিক্ষককে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নেকমরদ এলাকার ‘আরএইচ মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে’। সেখানে দু’জন শিক্ষক একাধিক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় প্রতিষ্ঠানের তিন শিক্ষককে অপসারণ করে পরিচালনা পর্ষদ।
ভুক্তভোগী ৩ সহকারী শিক্ষক হচ্ছেন- কাউসার হাবীব, রাজিউর রহমান ও হারুন অর রশিদ। ২০১৯ সালে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় নেকমরদ এলাকায় আরএইচ মেমোরিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
ইউএনও’কে দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক পংকজ সিংহ ও ফরিদউজ্জামান অনেক ছাত্রীর গায়ে হাত ও কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। এমনকি এক শিক্ষক ছাত্রীর সঙ্গে কৌশলে শারীরিক সম্পর্ক পর্যন্ত করেছেন। এসব বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এছাড়া কাউসার হাবীবকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন ফরিদউজ্জামান। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না করে হঠাৎ তিন শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
তিন শিক্ষক দাবি করে বলেন, ‘ছাত্রীরা তাদের সঙ্গে হওয়া নোংরামির কথা আমাদের জানাতো। আমরা সেগুলো প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে জানাতাম, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিত না।’ তারা ছাত্রীদের নিপীড়ন বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে দু’জন ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, গত ২৬ মার্চ ফরিদউজ্জামান তাদের বলেন, ‘তোমরা সাতজন আছ, কে আমার রুম পার্টনার হবা?’
আরেক ছাত্রী জানান, ফরিদউজ্জামান মাঝেমধ্যেই ক্লাস নেওয়ার সময় বেঞ্চের কাছে এসে পা দিয়ে তার পা চেপে ধরতো। যখন-তখন সুযোগ পেলে অশ্লীল কথা বলতেন, বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিতেন।
তবে এসব বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শিক্ষক ফরিদউজ্জামান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হামিদুর রহমান বলেন, ‘কোনো ছাত্রীর শিক্ষক কর্তৃক শ্লীলতাহানি হয়েছে এমন কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। শিক্ষকেরা অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সংঘাতে জড়িয়েছিলেন। এ জন্য তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান তাদের অব্যাহতি দিয়েছেন।’
পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, ‘কোনো ছাত্রীর শ্লীলতাহানি হয়নি বরং প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।’
পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান তনুজা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
অভিযোগ পাওয়ার বিষয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
সারাবাংলা/এমও