Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘এখনো বাচ্চার শরীর গরম আছে, শ্বাস নিচ্ছে— ওরে বাঁচান’

তাওহীদ কবির, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৫ আগস্ট ২০২২ ২৩:০০

ঢাকা: ‘তোমরা সবাই কই? একটু দ্রুত আসো। নয়তো সব শেষ হয়ে যাবে। আপনারা সবাই আমাদের সাহায্য করেন। এখনো বাচ্চার শরীর গরম আছে, শ্বাস নিচ্ছে। ওরে বাঁচান আপনারা। প্লিজ ওরে উদ্ধার করেন।’— এমনভাবেই আহাজারি করছিলেন শুভ নামের নিহতের এক স্বজন।

শুভ ছিলেন দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ির পরের গাড়িতে। তারা বৌভাতের অনুষ্ঠান শেষ করে কনের বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। তবে তারা কেউই জানতো না সেই যাত্রায় হারাতে হবে অনেক স্বজনকে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৩ আগস্ট) বিয়ে হয় হৃদয় ও রিয়া মনি’র। সোমবার (১৫ আগস্ট) রিয়া মনির স্বজনেরা নবদম্পতিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন কনের বাবার বাড়ি। এসময় উত্তরার জসিমউদ্দিন পৌঁছলে বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার নবদম্পতি ও স্বজনদের বহন করা প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে যায়।

এ সময় ঘটনাস্থলেই গার্ডারের চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন যাত্রী নিহত হয়। এসময় শুধু প্রাণে বেঁচে যান নবদম্পতি হৃদয় ও রিয়া। বিকেল ৩টায় রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানাধীন জসীমউদ্দিন এলাকায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- হৃদয়ের বাবা রুবেল (৫০), শাশুড়ি ফাহিমা (৪০), কনে রিয়া মনির খালা ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)।

শুভ নামে নিহতের ওই স্বজন বলেন, ‘শনিবার হৃদয় ও রিয়ার বিয়ে হয়। সোমবার ছেলের বাড়ি থেকে বর ও কনে নিয়ে কনের বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। আমি অন্যান্য স্বজনের সাথে পেছনের গাড়িতে ছিলাম। এয়ারপোর্ট পৌঁছানোর পর এক পুলিশ সদস্য ফোন দিয়ে দুর্ঘটনার সংবাদ দেয়। ঘটনাস্থলে এসে দেখি চারজন মারা গেছে এবং সেই শিশুটি জীবিত। সে নড়ছিল এবং শ্বাস নিচ্ছিল। যদি উন্নতমানের যন্ত্র থাকতো তাহলে অন্তত আরও একটি প্রাণ বেঁচে যেত। কিন্তু যখন উদ্ধার করতে পেরেছে ততক্ষণে সবকিছুই শেষ হয়ে গেছে।’

বিজ্ঞাপন

উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে ঘটনাস্থলে আসেন ফায়ার সার্ভিস, র‍্যাব, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। দুর্ঘটনার পর উত্তরা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসন এবং দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারটি সরিয়ে নিতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহসিন জানান, ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। যদি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হতো তাহলে হয়তো এমন দুর্ঘটনা ঘটতো না।

সারাবাংলা/পিটিএম

উত্তরা দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর