Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাগে-ক্ষোভে সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করে মা, ৩ দিন পর লাশ উত্তোলন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৬ আগস্ট ২০২২ ১৭:১১

ঢাকা: রাজধানীর মুগদায় দাফনের তিন দিন পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে ১০ মাসের শিশু তানজিনার মরদেহ। শিশুটির মা তানিয়াই তাকে গলা টিপে হত্যা করেছে- আদালতে এমন স্বীকারোক্তির পর লাশটি উত্তোলন করা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে শিশুটির মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এরপর স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়।

মর্গে শিশুটির বাবা শারীরিক প্রতিবন্ধী কিতাব আলী জানান, তাদের বাড়ি নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার চরকাশিনগর গ্রামে। নয় বছর আগে তানিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। পরিবার নিয়ে মুগদা পূর্ব মানিকনগর সোহাগ মিয়ার টিনসেড বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তানভীর নামে সাত বছরের আরেকটি ছেলে রয়েছে তাদের। এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। তানিয়াও জন্মগতভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী। এছাড়া মানসিক সমস্যা রয়েছে। আর তার প্রথম স্ত্রী রাজশাহীতে থাকেন।

কিতাব আলী আরও জানান, ১২ আগস্ট শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে তিনি রিকশা চালিয়ে বাসায় ফিরেন। এরপর গোসল করে ঘুমিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর স্ত্রী তানিয়া তাকে ডাকাডাকি করে বলেন, তানজিনা কোথায়? তখন কিতাব আলী সন্তানকে খোঁজাখোজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে বাসার ভেতরেই বালতির মধ্যে মাথা নিচের দিকে দিয়ে পড়া অবস্থায় দেখতেন পান। তবে বালতিতে সামান্য পানি ছিল। এরপর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত শিশুর খালা মার্জিয়া আক্তার জানান, তানজিনার মৃত্যুর খবর পেয়ে ওইদিনই গ্রামের বাড়ি নরসিংদী থেকে তিনি ও তার আরেক বোন রত্না আক্তার ঢাকায় আসেন। বিকেলে ঢাকায় পৌঁছে দেখেন, শিশুটিকে দাফনের জন্য মুগদা কুমিল্লাপট্টি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে মৃত্যুর বিষয় নিয়ে তাদের মনে সন্দেহ জাগে। এজন্য তারা আরেকটু দেরি করে দাফনের দাবি করেন। কিন্তু এলাকার কেউ তাদের কথা শোনেননি।

বিজ্ঞাপন

পরে সেখান থেকে তারা মানিকনগর কিতাব আলীর টিনসেড বাসায় গেলে প্রতিবেশীদের মুখে মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য শুনতে পান। এরপর বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসা করলে প্রতিবেশীরা জানান, শিশুটির মা তানিয়াই তাকে গলা টিপে মেরে ফেলেছে। তখন তারা মুগদা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ এসে শিশুটির বাবা-মা দুজনকেই আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তখন তানিয়া পুলিশের কাছে স্বীকার করেন, গলা টিপে হত্যার পর মরদেহ বালতিতে ফেলে রেখেছিলেন তিনি।

মুগদা থানাধীন মুগদাপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) নগেন্দ্র কুমার দাশ জানান, শিশুটির মরদেহ দাফনের পর মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হলে শিশুটির বাবা কিতাব আলী ১৩ আগস্ট তার স্ত্রী তানিয়াকে আসামিকে করে থানায় মামলা করেন। পরে শিশুটির মা তানিয়াকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন, রাগ ও ক্ষোভে তিনি নিজে শিশু সন্তানকে গলা টিপে হত্যা করেছেন। এরপর বালতির ভিতর উল্টো করে রেখে দেন। গ্রেফতারের পর সেদিনই তাকে আদালতে নেওয়া হয়। বিচারক তাকে সেখান থেকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

তিনি আরও জানান, আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গতকাল (১৫ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে মুগদা কুমিল্লাপট্টির হাজী নাজিমউদ্দিনের পারিবারিক কবরস্থান থেকে শিশুটির মরদেহ উত্তোলনের করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।

সারাবাংলা/এসএসআর/পিটিএম

গলা টিপে হত্যা মা

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর