গাড়ির হর্ন শুনে ক্ষুব্ধ আইনজীবী পেটালেন ২ গণমাধ্যমকর্মীকে
১৭ আগস্ট ২০২২ ২১:৪৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সংবাদ সংগ্রহে চট্টগ্রাম আদালতে যাওয়ার পথে গাড়ির হর্ন দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে দুই গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত দুই গণমাধ্যমকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আইনজীবীসহ কয়েকজন উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি এ হামলায় জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে অফিসের প্রাইভেটকার নিয়ে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের পাহাড়ে ওঠার পথে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অদূরে রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার শিকার দুই গণমাধ্যমকর্মীকে হলেন- যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক আল আমিন শিকদার ও ভিডিওগ্রাফার আসাদুজ্জামান লিমন।
আল আমিনের বরাত দিয়ে যমুনা টেলিভিশনের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান জামশেদ রেহমান চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালতে যাওয়ার রাস্তায় যানবাহনের কিছুটা চাপ ছিল। লোকজনও রাস্তায় এলোমেলোভাবে হাঁটছিল। গাড়ি এগিয়ে নিতে চালক হর্ন দেন। সেটা শুনেই একজন আইনজীবী অশ্লীল গালিগালাজ শুরু করেন। এ সময় আরও কয়েকজন আইনজীবীসহ কিছু লোক তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তখন আল আমিন ও লিমন গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবাদ করলে তারা ঝগড়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে আমাদের দু’জন সহকর্মীকে মারধর করা হয়। তাদের টেনে-হিঁচড়ে আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে নিয়েও মারধর করা হয়।’
আল আমিন ও আসাদুজ্জামান লিমনকে চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান জামশেদ রেহমান চৌধুরী। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন বলেও জানান তিনি।
জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ির হর্ন দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এরপর দু’জন সাংবাদিক ভাইকে মারধর করা হয়েছে বলে আমি শুনেছি। তাদের সমিতির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শুনে আমি গিয়েছিলাম। যা-ই হোক, এ ধরনের ঘটনা কাঙ্খিত নয়। আইনজীবী ও সাংবাদিক উভয়ই পেশাজীবী, পরস্পরের বিরুদ্ধে কেউ নয়। সাংবাদিক ভাইদের ওপর কারা হামলা করল, সেটা আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চিহ্নিতের চেষ্টা করছি। কোনো আইনজীবী অপরাধ করলে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, দুই গণমাধ্যমকর্মীর ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে)। এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম।
এক বিবৃতিতে সিইউজে নেতারা বলেন, আইনজীবী পরিচয়ে আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীকে ওপর হামলা নিন্দনীয়। এ ঘটনায় দোষীরা পার পেলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত আইনজীবীদের নিয়ে সাধারণের জনমনে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির উচিত দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ও আইনী ব্যবস্থা নেওয়া।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম