জামালপুর রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে
১৮ আগস্ট ২০২২ ১১:২৪
ঢাকা: ব্যয় বাড়ছে জামালপুরের গেইটপাড়া রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পে। এক্ষেত্রে বাড়ছে ১৩২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ মূল ব্যয়ের তুলনায় ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। প্রকল্পটির মোট ব্যয় ছিল ২৯১ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে দুই বছর বাড়ছে মেয়াদও।
এজন্য জামালপুর শহরের গেইটপাড়া এলাকায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এটির ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ২৪৭ কোটি ৫৭ লাখ ৩১ হাজার টাকা, যা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৮৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে ৮৭ শতাংশ।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সাবেক সদস্য ও বর্তমান পরিকল্পনা সচিব মামুন-আল-রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার জন্য প্রকল্পের আওতাধীন পূর্ত কাজের কয়েকটি অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়া নতুন ভূমি অধিগ্রহণ নীতিমালা অনুযায়ী ভূমি অধিগ্রহণ খাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ব্যয় বৃদ্ধিস্থ ইউটিলিটি স্থানান্তর খাতে বৃদ্ধি পেয়েছে। সে জন্য প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত রেলওয়ে ওভারপাসটি নির্মিত হলে জামালপুর শহরে সৃষ্ট যানজট হ্রাসসহ ঢাকা এবং অন্যান্য অঞ্চলের সাথে দ্রুত সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। তাই প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন শেষ করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর।
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত জামালপুর-মাদারগঞ্জ ও জামালপুর-ইসলামপুর-দেওয়ানগঞ্জ মহাসড়ক দুইটি জামালপুর শহরের মধ্য দিয়ে জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-জামালপুর জাতীয় মহাসড়কের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। জামালপুর শহরের গেটপার এলাকায় রেলওয়ে লেভেল ক্রসিং থাকায় সার্বক্ষণিক যানজট তৈরি হয়। ট্রেন চলাচলের ফলে জামালপুর শহরে সৃষ্ট ট্রাফিক জ্যাম হ্রাস করার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ হতে ২১১ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৭ সালের জুনে একনেকে এই রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়। এরপর মোট ব্যয় ২৯১ কোটি টাকা ধরে ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বিশেষ সংশোধন করা হয়। এছাড়া জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) প্রথমবার প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ গত বছরের জুন পর্যন্ত এক বছর বৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশন দ্বিতীয়বার ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পের মেযাদ চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এক বছর বৃদ্ধি করা হয়। বর্তমানে প্রকল্পের কিছু অঙ্গের ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মোট ৪২৫ কোটি ৪৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের চলতি বছরের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধিত প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির উপর গত বছরের ৯ ডিসেম্বর পিইসি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৪২৩ কোটি ৭০ লাখ ৭২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৭ সালের জুলাই হতে ২০২৩ সালে বাস্তবায়নের জন্য পুনর্গঠিত আরডিপিপিতে পাঠানো হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ১ দশমিক ১৭০ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ৪১৫ দশমিক ৪০৬ মিটার পিসি গার্ডার রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ, ৩২৩ দশমিক ৩৭০ মিটার র্যাম্প এবং ইউটিলিটি স্থানান্তর করা হবে।
সারাবাংলা/জেজে/এএম