কক্সবাজারে ৩ দিনে ৩০ দালাল আটক, টর্চার সেল থেকে উদ্ধার ৪
২০ আগস্ট ২০২২ ১৭:৪৬
কক্সবাজার: বেড়াতে আসা পর্যটকদের হোটেলে রুম বুকিং করিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা করছে সংঘবদ্ধ দালাল চক্র। ফাঁদে পেতে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা-মোবাইলসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। মাদক ও নারী দিয়ে ছবি তুলে জিম্মি করে পরিবার থেকে আদায় করছে টাকা। এসব অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। ৩ দিনের এসব অভিযানে অন্তত ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। দালালদের টর্চার সেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৪ পর্যটককে।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন। ৩ দিনের অভিযানে দালালদের মূল হোতা মো. আবদুল মালেক-সহ (৩৫) ৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। এই অভিযানে সাইনবোর্ড ছাড়া শিউলি কটেজ নামে এক কটেজে অভিযান চালিয়ে জিম্মিদশা থেকে ৪ পর্যটককে উদ্ধার করা হয়। জব্দ করা হয় নির্যাতনের উপকরণ।
জানা গেছে, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা বাস থেকে নামার পরপরই শুরু হয় সিএনজি-অটোরিকশার চালক নামধারী দালাল চক্রের মিশন। ‘মামা হোটেল লাগবে? কম টাকায় ভালো রুম পাবেন।’ এই বলে পর্যটকদের কাছে আসে। তাদের প্রধান টার্গেট নতুন এবং সহজ-সরল পর্যটক। রুম বুকিং করিয়ে হোটেল ম্যানেজারের কাছ থেকে কমিশন নেয় এসব দালাল।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসব নিম্নমানের হোটেলে রুম নিয়ে প্রতিনিয়ত ঠকছে পর্যটক। পর্যটকদের বলা হয়, কম মূল্যে ভালো রুমের কথা। কিন্তু বাস্তবচিত্র ভিন্ন। তাদের দেওয়া হয় নিম্নমানের রুম। রুম অপছন্দ হলেও কিছু করার থাকে না। কারণ এর আগেই লেনদেন শেষ হয়ে যায়। আর এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত থাকে হোটেল ম্যানেজার।
এছাড়াও অনেকে ভিন্ন ফাঁদ পেতে পর্যটকদের ছিনতাইসহ নারী ও মাদকের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে পরিবারের কাছ থেকে আদায় করছে মুক্তিপণ। এতে পর্যটন নগরীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে জানান, পর্যটক ও স্থানীয়রা।
ঢাকা থেকে বন্ধুদের সাথে বেড়াতে আসা পর্যটক সাইফুল ইসলাম জানান, তারা এই ফাঁদে পড়েছিল। কিন্তু কৌশলে বেঁচে গেছে। দালালদের সঙ্গে তাদের ভালোই ঝামেলা হয়েছিল।
তাদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, গত বছর তারা বেড়াতে এসে দালালদের হাছে অনেক বড় প্রতারণার শিকার হয়েছিল। এরপর থেকে সর্তক। তাদেরকে বিনোদনের ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে ইয়াবা আর পতিতা দিয়ে ফাসানো হয়। ছবি তুলে ৮০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করেছিল।
কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, ভোরে যখন শহরের বাসটার্মিনাল ও ডলপিন মোড়ে পর্যটকবাহী বাস আসে, তখন শিকারির মতো অপেক্ষা করে দালালরা। তারা পর্যটকদের মিথ্যা প্রলোভনে ফেলে ভালো রুম দেওয়ার কথা বলে প্রতারিত করে। বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। এই ক্ষেত্রে প্রশাসনের সর্তকতার পাশাপাশি বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও কটেজের ম্যানেজারদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
সারাবাংলা/এএম