ঢাকা: গায়ে পুলিশের লোগো লাগানো জ্যাকেট, হাতে ওয়াকিটকি, কোমরে পিস্তল। প্রথম ঝলকে চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। তারপর আবার অনলাইন থেকে ডাউনলোড করা ওয়ারেন্ট কপি তার হাতে। কপিতে টার্গেট ব্যক্তির নাম লেখা। এসব দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করত শাকিল হাসান। টাকায় বনিবনা না হলে কারাগারে পাঠানোর হুমকি। অবশেষে আসল পুলিশের হাতে ধরা খেলেন নকল পুলিশ কর্মকর্তা শাকিল হাসান।
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার শ্যামলী কাঁচা লংকা রেস্তোরাঁর মালিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদাবাজি করার সময় শাকিলকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে শেরেবাংলা থানা পুলিশ।
এসময় তার কাছ থেকে তিনটি পুরাতন ওয়াকিটকি, একটি পিস্তল সদৃশ গ্যাস লাইট, পুলিশের আইডি কার্ড, একটি গ্রেফতারি পরোয়ানার ফটোকপি, একটি এটিএম কার্ড, পুলিশ লেখা স্টিকারযুক্ত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এছাড়া একটি নেভি ব্লু রঙের স্লিভলেস জ্যাকেটসহ লাল ও ধূসর রঙয়ের দুটি হাফ হাতা গেঞ্জিও উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে তেজগাঁও উপ কমিশনারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, নওগাঁর বদলগাছি থানার শাকিল হাসান এভাবেই নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতেন। তিনি বসবাস করতেন রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে ভয় দেখিয়ে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ টাকা তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন তা জানা যায়নি।
এডিসি রুবাইয়াত জামান বলেন, তিনি শ্যামলী কাঁচা লংকা রেস্তোরাঁর মালিকের কাছে চাঁদাবাজি করার জন্য আসেন। ওই সময় ব্যবসায়ীকে টাকা না দিলে ব্যবসার ক্ষতি করা হবে বলে হুমকি দেন। পরে উপায় না দেখে পুলিশে অভিযোগ দেন রেস্তোরাঁর মালিক। এসময় শেরবাংলা থানা পুলিশের হাতে আটক হন শাকিল।
তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে শাকিল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে কোনো উত্তর মেলেনি তার কাছ থেকে। এরপর উপস্থিত মানুষজনের সামনে শাকিল স্বীকার করেন, পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে তিনি ওই রেস্তোরাঁর মালিক আব্দুর রহমানের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। আর তিনি পুলিশের কোনো সদস্য না। ভুয়া পরিচয়পত্র ও এসব দেখিয়ে দীর্ঘদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবজি করে আসছেন।
ভুয়া পুলিশ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে শাকিল হোসেন নামে রাজধানীর শেরবাংলা থানায় দুটি মামলা হয়েছে। আর এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাকিলের রিমান্ডে আবেদন করা হবে। রিমান্ডে আসলে তার কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য বেড়িয়ে আসবে বলে মনে করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।