আঘাত হয়ত আরও আসবে: প্রধানমন্ত্রী
২১ আগস্ট ২০২২ ১৩:৫৪
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আঘাত হয়ত আরও সামনে আসবে। কারণ আব্বা যখন দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন তো ১৫ আগস্ট ঘটেছে। আজকেও বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে, উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। সেগুলো যারা সহ্য করতে পারবে না, তারা বসে থাকবে না, তারা আঘাত করবে।
রোববার ২১ আগস্ট নৃশংস জঘন্য গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তার আগে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধা জানান। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময় কিছুটা দুরত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ গ্রেনেড হামলায় আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গাড়ি থেকে নেমে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও দলের নেতাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কুশল বিনিময় করেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কালো দিন। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নারকীয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। রবিবার (২১ আগস্ট) ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী পালন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদে ২০০৪ সালের এইদিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন বিরোধী দলের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
সেদিন গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে দানবীয় সন্ত্রাসী হামলায় আক্রান্ত হয় আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীরা। আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মূল টার্গেট বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার লক্ষ্যে হামলা চালানো হলেও অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। শুধু গ্রেনেড হামলাই নয়, সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গাড়ি লক্ষ্য করেও চালানো হয় ছয় রাউন্ড গুলি। দলীয় নেতাকর্মীরা মানবঢাল তৈরি করায় সেদিন প্রাণে বেঁচে যান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেগম আইভি রহমানসহ দলের ২৪ নেতাকর্মী প্রাণ হারান। আহত হন বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীসহ আওয়ামী লীগের কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী। তাদের অনেকেই শরীরে এখনও স্প্লিন্টারের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নিজের ওপর বারবার আঘাতের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘হয়ত এটিই বড় অপরাধ ১৯৯৬ থেকে ২০০১ অত্যন্ত সফলভাবে দেশ চালিয়ে মানুষের ভেতর আস্থা অর্জন করেছিলাম। সে জন্যই তো ২১ আগস্টের ঘটনা। আমাকে শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। তো আল্লাহ আমাদেরকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। সে জন্য আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম।’
‘আজ যারা এখনও স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছে প্রত্যেকেই কষ্ট ভোগ করছে যত বয়স বাড়ছে ততই শরীরে যন্ত্রণাটা বাড়ছে। আমি সকলের খোঁজ রাখি, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল থেকে সাহায্য করি এবং আমার যতুটুকু আমি করে দিয়েছি যারা মারা গিয়েছে তাদের প্রত্যেকের ফ্যামিলির কাউকে ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছি কাউকে জমি কিনে দিয়েছি ঘর করে দিয়েছি। প্রতি মাসে ওষুধ কেনার টাকা দিয়ে যাচ্ছি আমার সাধ্যমতো করে যাচ্ছি।’
কিন্তু তারা যা হারিয়েছে সে তো আর ফেরত দিতে পারব না বা তাদের শরীরের যন্ত্রণাটা প্রশমন করতে পারব না বলেও সমবেদনা জানান তিনি।
সারাবাংলা/একে