২১ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর খুনি ডালিম-রশিদ ঢাকায় ছিল: প্রধানমন্ত্রী
২১ আগস্ট ২০২২ ১৪:৩৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময় বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল রশিদ ও ডালিম বাংলাদেশে ছিল এই চক্রান্তের সঙ্গে। তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেও এটা জানতে পারবেন। যখন দেখল ২১ আগস্টের হামলায় আমি মরিনি, বেঁচে গেছি- এটা জেনে ওই রাতেই তারা ভেগে (পালিয়ে) গেল। খালেদা জিয়া যে কোনোভাবেই হোক তাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করল।
রোববার ২১ আগস্ট নৃশংস জঘন্য গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তার আগে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রী গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধা জানান। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এসময় কিছুটা দুরত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতারাসহ গ্রেনেড হামলায় আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গাড়ি থেকে নেমে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত ও দলের নেতাদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কুশল বিনিময় করেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কালো দিন। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় নারকীয় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। রবিবার (২১ আগস্ট) ইতিহাসের ভয়াবহতম গ্রেনেড হামলার ১৮তম বার্ষিকী পালন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মেয়াদে ২০০৪ সালের এইদিনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তৎকালীন বিরোধী দলের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বারবার আঘাতের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু আমরা সরকারে এসে রিভেঞ্জ (প্রতিশোধ) নিতে যাইনি। আমরা তো আর ওদের ঘরবাড়িও দখল করিনি, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারিনি, কারাগারে রাখিনি কিছুই করিনি। যে মামলাগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল সেগুলোই চলছে। আর যদি কেউ অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা। একজন খুন খারাবি করে দেশ থেকে পালিয়েছে। ২১ আগস্ট যারা হত্যা করেছিল তারা দেশ থেকে পালিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এদেরকে কে এনেছিল। যদি বিএনপি সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা না করা হয় তারা আসল আবার তারা চলেও গেল এবং বিভিন্ন দেশে তারা রিফিউজিটিভ হয়ে আছে।’
‘খালেদা জিয়ার বক্তব্যগুলি একটু অনুসরণ করবেন। যখন কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রাখা হল ঠিক তার আগে খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ শত বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার আগে খালেদা জিয়ার বক্ততায় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও কোনোদিন হতে পারবে না।’
খালেদা জিয়ার আমলে যাদেরকে ক্রসফায়ারে মারা হয়েছে, অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে আমাদের যে সমস্ত নেতাকর্মী যাদেরকে অত্যাচার করে করে হত্যা করা হয়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস করে যাদেরকে মারা হয়েছে; এদের তো হত্যা খুন এটাই তো ওদের চরিত্র বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তাদের সঙ্গে বসতে হবে। তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, তাদেরকে খাতির করতে হবে, ইলেকশনে আনতে হবে, এত আহ্লাদ কেন? আমি তো বুঝি না। বাংলাদেশে কি মানুষ নেই এবং অনেক বিদেশিদের কাছে যে কান্নাকাটি এবং সেখানে এসে তারা রিকোয়েস্ট করে কোনোমতে তাদের একটু জায়গা দেওয়া যায় কি না? জায়গা দেবে কি দেবে না, সেটি ভাববে জনগণ। সেই সিদ্ধান্ত দেবে বাংলাদেশের জনগণ।’
বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০০৭ জেলে যখন ছিলাম জেলে বসে বসেই সেগুলি সব নোট করে রেখেছিলাম। কোন সালে আমরা কি কি করবো। তারপর আমরা রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা দেই। আমার যতুটুকু লক্ষ্য ছিল সেটা আমি অর্জন করে দিয়েছি। এরপর হয়ত ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যারা চালাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের পরিচালনায় স্মরণ সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সারাবাংলা/এনআর/একে