Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজধানীর ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় লিগ্যাল নোটিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২১ আগস্ট ২০২২ ১৭:২৬

ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ার ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা বরাবর আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

লিগ্যাল নোটিশে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র, ভূমি মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউকের) চেয়ারম্যান, পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর এলাকা প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক (ডিসি), ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বিবাদী করা হয়েছে।

রোববার (২১ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও সমমনা সাতটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও একজন বিশিষ্ট নাগরিক যৌথভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার কাছে এই নোটিশ পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), নিজেরা করি, এসোসিয়েশন ফর ল্যান্ডরিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ব্লাস্ট, নাগরিক উদ্যোগ, গ্রিনভয়েস এবং স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের পক্ষে বেলার প্রধান নির্বাহী আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই নোটিশ পাঠান।

নোটিশের মাধ্যমে মাঠটি জনস্বার্থে মাঠ হিসেবে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অননুমোদিত ও বেআইনিভাবে শুরু হওয়া মার্কেট নির্মাণের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে মাঠটিকে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়েছে নোটিশে।

উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৫ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত ৭ দশমিক ৪৭ একর আয়তন বিশিষ্ট পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ যা ঢাকা মহানগরীর সর্ববৃহৎ মাঠ।

এ মাঠে পুরান ঢাকার সাতটি থানা এলাকার শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলা করে। এটি শুধু একটি খেলার জায়গাই নয়, আশেপাশের এলাকার বাসিন্দারা, বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে অবসর সময় কাটানোর জন্যও এ মাঠে যান। ধূপখোলা মাঠটি ঢাকা মহানগরীর ঐতিহ্য ও গর্বের একটি অংশ। এ মাঠে বাংলাদেশের জাতীয় দলের বেশকিছু খেলোয়ার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখনো প্রতি বছরই ধূপখোলা মাঠ থেকে জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরি হয়। মাটটি মূলত তিন ভাগে বিভক্ত। এর একটি অংশ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। বাকি দুটি অংশ ইস্ট এ- ক্লাব মাঠ ও স্থানীয় খেলার মাঠ। তিনটি অংশের প্রত্যেকটি আকারে একটি ফুটবল মাঠের চেয়ে বড়। ২০১৬ সালে মাঠে একটি বাণিজ্যিক শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিবাদে সভা-সমাবেশ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাধ্য হয়ে গণশুনানির আয়োজন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তাতে এলাকাবাসী বাণিজ্যিক আগ্রাসন থেকে ধূপখোলা মাঠ রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেন।

গণদাবির মুখে বাণিজ্যিক শিশুপার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেও বর্তমানে মাঠটিতে গ্যালারিসহ খেলার মাঠ ও শিশু কর্নার এবং একটি বহুতল মার্কেট নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

প্রবল জনআপত্তি ও আন্দোলনের ফলে প্রকল্পের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখলেও ২০২১ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়াই মাঠের ভেতরে রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে একটি বহুতল মার্কেট তৈরির কাজ শুরু করেছে।

বলা হচ্ছে, এটি মাঠ ‘উন্নয়ন’ উদ্যোগের অংশ। এ মার্কেটের কারণে মাঠের মোট ০ দশমিক ৬২ শতাংশ জায়গা কমে যাবে। বহুতল মার্কেটটি ছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মাঠটিতে হাঁটার রাস্তা, বসার ব্যবস্থা, পার্কিং জোন, একটি ক্যাফেটেরিয়া ও শিশুদের জন্য একটি আলাদা জোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। ফলে মাঠের জায়গা আরও কমবে। কথিত ’উন্নয়ন’ কাজের ফলে ফুটবল মাঠের আকার ৭ দশমিক ৪৭ একর থেকে ৪ দশমিক ০১ একরে নেমে আসবে। এর ফলে উন্মুক্ত ও জনসাধারণের ব্যবহৃত স্থান হিসেবে মাঠের মূল বৈশিষ্ট্যগুলোই হারিয়ে যাবে আর সাথে হারাবে এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য যেন কোনোভাবেই হারিয়ে না যায় এবং ঐতিহাসিক ধূপখোলা মাঠ যেন মাঠ হিসেবেই ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষিত থাকে সে উদ্দেশ্যেই এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস

টপ নিউজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ধূপখোলা মাঠ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

বাংলাদেশ-ভারত টেস্টে হামলার হুমকি!
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৩৫

সম্পর্কিত খবর