Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিএনপির নেতারা প্যাথলজিক্যাল লায়ার’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ আগস্ট ২০২২ ১৯:১১

ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেছেন, আপনাদের বুকে ব্যথা, আপনাদের গা জ্বলে। আপনাদের যন্ত্রণা কোথায় আমরা জানি। একুশে আগস্ট মারতে পারেননি। তিনি কেন (শেখ হাসিনা) বেঁচে আছেন। একজনকে সরিয়ে দিতে হবে। এটাই আপনাদের চক্রান্ত। সেই চক্রান্ত এখনো চলছে। এই দলটি চিরদিন আমাদের শত্রু ভেবেছে। এত উদারতা দেখানোর পর শেখ হাসিনাকে শত্রু হিসেবে এরা বেছে নিয়েছে। এই দলের নেতারা সত্য কথা বলে না। এরা প্যাথলজিক্যাল লায়ার। এরা মিথ্যা কথা।

বিজ্ঞাপন

রোববার (২১ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে একুশে আগস্ট নারকীয় গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ ও নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মঞ্চে উপস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেত্রী, আপনি অনেককে সেদিন ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার যারা মাস্টারমাইন্ড, একুশের আগস্টেরও মাস্টারমাইন্ড তারা। হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নান তার স্বীকারোক্তিতে বলেছে, হাওয়া ভবনের গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে তারা অপারেশন শুরু করেছিল। এ সত্য কি অস্বীকার করতে পারবেন?’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পঁচাত্তরের সংশ্লিষ্টতা, বঙ্গবন্ধু হত্যার পরিকল্পনা‌। বঙ্গবন্ধু হত্যার পরে কে বলেছিল, ওয়েলডান মেজর ডালিম, ইউ হ্যাভ ডান অ্যা গ্রেট জব। আজ সত্যকে অস্বীকার করবেন না। বাংলাদেশের রাজনীতি সম্পর্কে অনেকেই কথা বলেন। আমাদের বন্ধু দেশগুলোও বলেন। কেন বাংলাদেশে এই আবিষ্টতা? আমাদের অবসেশন আছে। এই দল (বিএনপি), তাদের প্রতিষ্ঠাতা, আমাদের পিতা হত্যার সঙ্গে জড়িত। জাতির পিতা হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। বিচাররোধকারী ইনডেমিনিটি অর্ডিন্যান্স আইনে পরিণত করেছে পঞ্চম সংশোধনীতে। অস্বীকার করতে পারবেন? এই প্রশ্ন বহুবার করেছি। মির্জা ফখরুলের কাছে জবাব পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের রাজনৈতিক সম্পর্কে যে উঁচু দেয়াল তৈরি করেছে, তা কখনও আর ব্রিজ তৈরি করতে পারেনি। এই দেয়াল ৩ নভেম্বর এসে আরও উঁচু হয়েছে। একুশে আগস্ট এসে আরও উঁচুতে নিয়ে গেছে। তারপরও শেখ হাসিনা তাদের গণভবনে ডাকেন, সংলাপ করেন, টেলিফোনে কথা বলে অপমানিত হন।’

বিজ্ঞাপন

আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত মাতা খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে শেখ হাসিনা হাসিনার ছুটে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ছেলে মারা গেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছুটে গিয়েছিলেন শোকাহত মাকে সান্ত্বনা দিতে। ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের গেট প্রধানমন্ত্রীর মুখের উপর বন্ধ করে দেওয়া হলো। সেদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে আপনারাই বাংলাদেশে রাজনৈতিক সম্পর্কের দেয়ালকে আরও উঁচুতে তুলেছেন। আপনারাই সেদিন প্রকারন্তরে সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘তবুও বঙ্গবন্ধুকন্যা আপনাদের সাথে দুই দফা সংলাপ করেছেন। আজ মিথ্যা কথা বলেন, মিথ্যাচার করেন। জনপ্রিয়তা নাকি তলানিতে। জনপ্রিয়তা দেখবেন? এই কয়দিন তো আমরা কিছু করিনি। তারপরও শেখ কামালের মাজারে, বঙ্গমাতার মাজারে, বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরে, টুঙ্গিপাড়ায় জনতার বাঁধভাঙা স্রোত দেখেছেন?’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, পল্টন আর প্রেস ক্লাবে নির্দিষ্ট জায়গায় সমাবেশ করে তলানিতে নিয়েছেন আপনাদের জনপ্রিয়তা। আমি বলব, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে পঁচাত্তর পরবর্তীকালে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এ সত্য বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্ব স্বীকার করে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে ১৪ দলের নেতারা আছেন। এইগুলো বলার দায়িত্ব শুধু আমাদের নয়, আপনাদের সকলের। একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস হয়? আগে কেক কেটে ভুয়া জন্মদিবস পালন করতো। আমরা ভেবেছিলাম এবার করবে না। কিন্তু ঠিকই ১৬ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও কেক কেটেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলবেন কি একটা মানুষের কয়টা জন্মদিবস? সর্বশেষ করোনা টেস্টে পাওয়া গেল, তার ৬ষ্ঠ জন্মদিবস। ১৫ আগস্ট কেন পালন করেন? এর জবাব দিতে হবে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে বলি, যেই দলের নেতার এতগুলো জন্মদিবস, তাকে কি বিশ্বাস করেন? তাদের বিশ্বাস করা যায়? তাদের ওপর আস্থা রাখা যায়?’

বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামনে নির্বাচন, অপেক্ষা করুন। কে কত জনপ্রিয় প্রমাণ হয়ে যাবে। অপেক্ষা করুন, বাংলাদেশের মানুষ কী চায় প্রমাণ হয়ে যাবে। নির্বাচনের বিরুদ্ধে কেন বলেন? প্রমাণ করতে হবে নির্বাচন দিয়ে। শেখ হাসিনা জনপ্রিয়, বাংলাদেশের মানুষ তার সঙ্গে আছে। তার উন্নয়ন অর্জনে বাংলাদেশের মানুষ খুশি।’

আলোচনা সভার আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদিতে শ্রদ্ধা জানান। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে নির্মিত বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন। এরপর আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এ সময় কিছুটা দূরত্বে দলের কেন্দ্রীয় নেতাসহ গ্রেনেড হামলায় আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

ওবায়দুল কাদের টপ নিউজ নেতা প্যাথলজিক্যাল লায়ার বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর