Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা ছাড়া সুমনের মরদেহ নেবে না পরিবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ আগস্ট ২০২২ ১৯:৩২

ঢাকা: রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হেফাজতে চুরির মামলার আসামি সুমন শেখ ওরফে রুম্মনের মৃত্যুর ঘটনায় রোববার (২১ আগস্ট) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পরিবার ছাড়াই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মরদেহ নিয়ে পুলিশ ভোলায় যেতে বললেও স্ত্রী জান্নাত আরার দাবি, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা না করে তারা মরদেহ নেবেন না।

রোববার (২১ আগস্ট) বিকেলে সুমনের শ্যালিকা শাহনাজের মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় স্ত্রী জান্নাত আরা সারাবাংলাকে এ সব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমার স্বামীকে রামপুরার বাসা থেকে ধরে নিয়ে গেল। সুস্থ মানুষ নিয়ে গেল অথচ মৃত মানুষ পেলাম। কীভাবে মরল, কোথা থেকে কী হলে তা কেউ জানল না। এখন মর্গে থেকে মরদেহ নিয়ে গ্রামে যেতে বলে। আমাদের বাড়ি ভোলায়। আমরা মরদেহ ঢাকার বাসায় নিয়ে আসব তা পুলিশ আনতে দিচ্ছে না। আমরা এ জন্য মরদেহ নিইনি, মরদেহ মর্গেই রয়েছে।’

জান্নাত আরা আরও বলেন, ‘সুমন কেন থানার ভেতরে মরল তার জবাব পুলিশকে দিতে হবে। সুমনকে নির্যাতনে হত্যা করা হয়েছে। এরপর আমাদের সঙ্গে অনেক টালবাহানা করেছে। জড়িতদের ফাঁসি চাই। মামলা করব আদালতে। এরপর মরদেহ গ্রহণ করব।’

আরও পড়ুন: পুলিশ হেফাজতে মুত্যু, ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ

সুমনের শ্যালিকা শাহনাজ বলেন, ‘আগের দিন দুলাভাইকে (সুমন) ধরে নিয়ে গেল পুলিশ। পরদিন সকালে আমরা থানায় গেলাম। পুলিশ জানায় আদালতে যান সুমনকে আদালতে পাঠানো হবে। এরপর আমরা আদালতে যাই। আদালতে গিয়ে জানতে পারি, সুমনকে আনা হয়নি। সেখানে থানা থেকে একটি কাগজ পাঠানো হয়েছে। কাগজে লেখা রয়েছে, রাতে সুমন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এটি শুনে আমরা থানায় ছুটে আসি। এরপর থানা পুলিশ আমাদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখায় যেখানে সুমনের মরদেহ নামানো বা গলায় ফাঁস দেওয়া কিছুই দেখা যায়নি। আজ আমরা মরদেহ নেবো কেমন করে। আমরা তো কিছুই জানলাম না। কীভাবে একজনের মৃত্যু হলো, কোথা থেকে কি হলো তার কিছুই বুঝতে পারছি না আমরা। তাই আমরা মামলা করব তারপর মরদেহ নেব।’

বিজ্ঞাপন

সুমনের দুলাভাই মোশাররফ শেখ বলেন, ‘গতকাল আমরা যখন থানার সামনে তখন এক এসআই আমার কাছে জানতে চান, সুমনের মরদেহ আমরা কোথায় নেব। তাকে বলি, রামপুরার বাসায় নেওয়া হবে। সেখানে মরদেহ গোসল করিয়ে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে। তখন তিনি বলেন, না। মরদেহ রামপুরায় নিতে দেওয়া হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা মামলা করতে আদালতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা যাওয়ার আগেই আদালতের কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ায় আবেদন সাবমিট করতে পারিনি। আগামীবার আবার আদালতে যাব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে সুমনকে থানায় এনে আলাদা একটি লকআপে রাখা হয়েছিল। রাত ৩টা ৩২ মিনিটে ভেন্টিলেটরের রডের সঙ্গে সুমন নিজের ট্রাউজার খুলে গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। থানার সিসিটিভি ফুটেছে এটি দেখা গেছে।’

এ ঘটনায় ‘দায়িত্বে অবহেলার কারণে’ হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল জাকারিয়াকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হাতিরঝিল থানা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর