বগুড়ায় সড়ক খুঁড়ে রেখে ‘লাপাত্তা’ ঠিকাদার
২১ আগস্ট ২০২২ ২০:৫৭
বগুড়া: ২০২১ সালের মার্চ মাসে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার থেকে সিংড়া উপজেলার ১৮০০ মিটার কাঁচা সড়কের মধ্যে ১২০০ মিটার পাকাকরণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন। আইআরআইডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ওই কাজের উদ্বোধন করা হয়।
এর প্রায় ৫-৬ মাস পর রাস্তার মাঝখানে মাটি খুঁড়ে অল্প কিছু বালু ফেলে রেখে কাজ শুরু করা হয়। এরপর ঠিকাদার লাপাত্তা। সড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার অংশ এভাবে ফেলে রাখায় দুই উপজেলার হাজার-হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
১২০০ মিটার সড়কের জন্য নন্দীগ্রাম-রণবাঘা হয়ে আনুমানিক ২২ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যানবাহন নিয়ে আসতে হচ্ছে এলাকার মানুষদের। জনসাধারণের চরম দুর্ভোগের কথা কেউ ভাবছেন না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে আইআরআইডিপি-৩ এর আওতায় নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের দাসগ্রাম বাজার হইতে সিংড়া উপজেলার মাসিন্দা পাকারমাথা ১৮০০ মিটার কাঁচা সড়কের মধ্যে ১২০০ মিটার পাকা করার কাজ শুরু হয়। এ জন্য ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ২০৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মেসার্স ছন্দা এন্টারপ্রাইজ নামে এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি শুরু করে। ২০২২ সালের ফ্রেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বেড খুঁড়ে অল্প কিছু বালু ফেলে রাখা ছাড়া কাজের কোনো অগ্রগতি নেই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের মাঝখানে প্রায় ১০ ফুট চওড়া ও ২ ফুট গভীর করে মাটি খুঁড়ে রাখা হয়েছে। খুঁড়ে রাখা সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে কাদা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে দিয়েই ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন ঠেলে ঠেলে পার করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
শালিকাপাড়ার বেলাল হোসেন বলেন, ‘এ সড়কের বাপ-মা নেই। তাই সড়ক খুঁড়ে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা হয়েছে। সড়কে হাঁটু সমান কাদা জমে গেছে। এই কাদার কারণে ধান বিক্রির জন্য ১০ টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে ৫০ টাকা। সড়কের কাজ করতে পারবে না, তাহলে খুঁড়ে রাখলো কেন?’
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শংকর কুমার সরকার বলেন, ‘দুই উপজেলার হাজার-হাজার মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। মানুষ সবসময় আমার কাছে এ সড়কের বিষয়ে অভিযোগ করে।’
জানতে চাইলে ঠিকাদারের প্রতিনিধি পুটুল মিয়া বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেশি হওয়ার কারণে কাজ করতে পারছি না। তবে কাজ আবার শুরু করবো।’
উপজেলা প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আবহাওয়ার কারণে কাজ বিলম্বিত হয়েছে। তবে খুঁড়ে রাখা সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে।’
সারাবাংলা/এমও